আজ - শুক্রবার, ২৮শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি, (বর্ষাকাল), সময় - সকাল ৬:১৬

খাসি নিয়ে ভাইরাল যুবক এনবিআর কর্মকর্তার ছেলে নন

কোরবানির জন্য রাজধানীর সাদেক এগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনে ভাইরাল হন ইফাত নামের এক তরুণ। গুঞ্জন ওঠে, তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। কিন্তু সরকারি এই কর্মকর্তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ভাইরাল হওয়া এই তরুণ তার ছেলে নয়। এমনকি ওই যুবকের সঙ্গে তার কোনো আত্মীয় সম্পর্কও নেই।

জানতে চাইলে মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল ওই ছেলেকে আমি চিনি না। সে আমার সন্তান নয়। আমার নাম জড়ানোতে আমি ও আমার পরিবার অনেক বিব্রত।’

মোহাম্মদপুরে অবস্থিত ‘সাদিক এগ্রো’ ফার্মের কর্ণধার মোহাম্মদ ইমরান হোসাইন জানান, আলোচিত সেই তরুণ শুধু এক লাখ টাকা দিয়ে ছাগলটি বুক করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি পুরো টাকা পরিশোধ করে ছাগলটিকে খামার থেকে বাড়িতে নিয়ে যাননি এখনও।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৫ লাখ টাকা দামের এই ছাগলের ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, একটি ছেলে ছাগলটিকে ধরে রয়েছে। তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন ইমরান হোসাইন।

আলোচিত ওই ধূসর বাদামি রঙের ছাগলটির ওজন ১৭৫ কিলোগ্রাম এবং উচ্চতা ৬২ ইঞ্চি। প্রায় দুই মাস আগে এটিকে যশোরের একটি হাট থেকে ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় কেনে সাদেক এগ্রো। ফেসবুকের এই ছাগলের সঙ্গে ওই যুবক ছবি দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয় সমালোচনা। এক রাজস্ব কর্মকর্তা কীভাবে এতো দামে ছাগল কিনলেন তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

ঈদের আগেই এই সমালোচনা শুরু হয়। কিন্তু কোরবানির জন্য ছাগলটি কিনতে ওই ছেলেটি বুকিং মানি জমা দিলেও শেষ পর্যন্ত ছাগলটি খামার থেকে নেননি। এমনকি বুকিং মানিও ফেরত নেননি।

এ বিষয়ে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান বলেন, ইফাত নামের এক ক্রেতা আমাদের কাছ থেকে খাসিটি ১২ লাখ টাকায় কিনে নেন। আমরা খাসিটির দাম ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিলাম। এক লাখ টাকা বুকিং দিয়েও তিনি খাসিটি আর নিতে আসেননি। সম্পূর্ণ টাকা আমাদের পরিশোধ করে খাসিটি নেওয়ার কথা ছিল ১২ জুন। আমরা ১১ জুন রাত থেকে ওই ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারিনি। আমরা এখনো তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সে ফোন ধরছে না।

যে ছাগলের দাম নিয়ে এত আলোচনা, তা হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাতের ছাগল, বলেছেন সাদিক এগ্রোর মালিক মোহাম্মদ ইমরান হোসেন। তিনি বলেন, এ জাতের নাম ‘বিটল’ এবং বাংলাদেশে এটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ছাগল।

আলোচিত ওই ধূসর বাদামি রঙের ছাগলটির ওজন ১৭৫ কিলোগ্রাম এবং উচ্চতা ৬২ ইঞ্চি। মি. হোসেন জানান, বিরল প্রজাতির এই ছাগল বাংলাদেশে এখন একটিই আছে। এটি আমদানি করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে ইমরান হোসেন জানান, আজ থেকে দুই মাস আগে ছাগলটি যশোরের একটি হাট থেকে ক্রয় করা হয়েছিল।

যশোরের হাটে এই ছাগল কীভাবে এলো? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তা জানি না। তবে এরকম ছাগল, বড় বড় গরু প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রামে গঞ্জে, হাটেই বিক্রি হয়। হাট থেকে কিনে এনে আমরা সেগুলো লালন-পালন করে বিক্রি করি।’

‘আমাদের কাছে যখন তথ্য আসছে, আমরা সঙ্গে সঙ্গে লোক পাঠিয়ে টাকা দিয়ে এটা কিনে নিয়ে আসছি। কারণ আমাদের কাছে ছাগলটাকে খুব ভালো লেগেছে।’

ইমরান হোসেনের দাবি, এই ছাগলটির ক্রয়মূল্যই পড়েছিল ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক আরও খরচ আছে।

সেজন্যই এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫ লাখ টাকা। ছাগলের দাম বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ হলো উন্নত জাত ও বংশমর্যাদা।

এখানে বংশমর্যাদার বিষয়টি ঠিক কী, তা জানতে চাইলে ইমরান হোসেন বলেন, ভালো বংশমর্যাদার ছাগল বা গরুর ক্ষেত্রে বিক্রির সময় ক্রেতার কাছে সার্টিফিকেট দেখানো হয়।

আরো সংবাদ