আজ - সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - রাত ৪:০৮

খুলনা বিভাগে ১ম দফায় প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন ৬,৯৪,৯০৩জন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন (টিকা) প্রথম দফার প্রথম ডোজ প্রদান কার্যক্রম শেষ হয়েছে ৩১ মার্চ বুধবার। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশব্যাপি গণমানুষের জন্য ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। শুক্রবার ও রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন ব্যাতিত অনলাইনে নিবন্ধনকারীদের প্রতিদিনই ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে।
প্রথম দফায় ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের আগামী ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে। খুলনা বিভাগে প্রথম দফায় প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯শ’ ৩জন। এর মধ্যে খুলনা জেলায় সর্বোচ্চ ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬শ’ ৭৮জনকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যশোর জেলা। এ জেলায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৮শ’ ৮৬জন।
প্রথম দফায় সরকার কর্তৃক তালিকাভুক্ত ১৫ ক্যাটাগরিতে অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন করে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। এ তালিকায় রয়েছেন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ডাক্তার, নার্সসহ সকল পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনা, আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, প্রতিরক্ষা কাজে নিয়োজিত সদস্য, রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মকর্তা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম কর্মী, জনসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার কর্মী, ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, জরুরি বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন কাজে নিয়োজিত কর্মী, সকল বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মন্ত্রণালয় বিভাগ, জেলা ও উপজেলা সমূহের আবশ্যকীয় জনসেবায় নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। এরপর যুক্ত হন স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারী বৃন্দ। অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তদের কোনো বয়স নির্ধারণ ছিল না। অগ্রাধিকার তালিকাভুক্তরা ছাড়াও ৪০ বছর বা তদুর্দ্ধ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পেয়েছেন।  
যশোরের সিভিল সার্জন ডাক্তার শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, যশোরবাসীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রথম দফায় গত ৩১ জানুয়ারি ৯৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন বরাদ্দ আসে। মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় নতুন করে ভ্যাকসিন পাঠানোর চাহিদা দেয়া হয়। ১০ মার্চ সরকার ২০ হাজার ডোজ ও ২৩ মার্চ আরও ৪ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন দিয়েছে। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ জেলার ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্বিঘ্নে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও মহামারি মোকাবেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিটি কর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করতে না করতেই সম্প্রতি সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই আশংকাজনকহারে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে নতুন করে কর্মপরিকল্পনা করা হচ্ছে। শীঘ্রই তা বাস্তবায়ন করা হবে।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, গত ৭ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের দিন থেকে শুক্রবার  ও রাষ্ট্রীয় ছুটি ব্যতিত ৩১ মার্চ পর্যন্ত খুলনা বিভাগের ১০টি জেলায় ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯শ’ ৩জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে খুলনা জেলায় ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৯শ’ ৩জন, যশোরে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮শ’ ৮৬জন, বাগেরহাটে ৫২ হাজার ৭শ’ দু’জন, ঝিনাইদহে ৭০ হাজার ৭শ’ ৩১, কুষ্টিয়ায় ৬৩ হাজার ৪শ’ একজন, মাগুরায় ৪৩ হাজার ৭শ’ ৫৮, নড়াইলে ২৯ হাজার ৬শ’ ২২, সাতক্ষীরায় ৭৮ হাজার দু’জন, চুয়াডাঙ্গায় ৫৫ হাজার ৭১ ও মেহেরপুরে ১৮ হাজার ৫২জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
এদিকে, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার রেহনেওয়াজ রনি জানিয়েছেন, প্রথম দফার প্রথম ডোজ প্রয়োগের শেষ দিন অর্থাৎ বুধবার যশোরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন নিয়েছেন এক হাজার ৬শ’ ৫৪ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৯শ’ ৭৯ ও নারী ছয়শ’ ৭৫ জন। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন ৪শ’ ৫জন। এরমধ্যে দু’শ’ ২৩ জন পুরুষ ও একশ’ ৮২ জন নারী রয়েছেন। পুলিশ হাসপাতাল থেকে ৪জন পুরুষ ও ৫জন নারী, বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান মেডিকেল স্কোয়াড্রনে ৭২জন পুরুষ ও একজন নারী, যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে ৫৯ জন পুরুষ ও একজন নারী টিকা গ্রহণ করেছেন।
এছাড়া, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পুরুষ ৫৬ ও নারী ৫৪ জন, বাঘারপাড়ায় পুরুষ একশ’ ৭জন ও নারী একশ’ তিনজন, চৌগাছায় ৯৪ পুরুষ ও নারী ৬৩ জন, ঝিকরগাছায় ৮৭ জন পুরুষ ও নারী ৫৩ জন, কেশবপুরে পুরুষ ৮০ জন ও নারী ৬০ জন, মণিরামপুরে পুরুষ একশ’ ৪৩ ও নারী একশ’ ৭জন এবং শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পুরুষ ৫৪ ও একশ’ ৪৬ জন নারীকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত