আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১:০২

খোলেনি বন্যা কবলিত ১০৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বন্যায় পৌরসভাসহ আট ইউনিয়নে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ১০৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনও বন্যার পানি রয়েছে। দিন দিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বন্যা কবলিত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

রাস্তাঘাট ডুবে বিভিন্ন এলাকায় সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন বিপাকে পড়ছেন। যোগাযোগের জন্য নৌকা ও ভেলাই একমাত্র ভরসা বলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো জানিয়েছেন।

উপজেলার কদিমধল্যা-বরাটি রাস্তা, শুভুল্যা-বরাটি রাস্তা, পাহাড়পুর-বুধিরপাড়া, ভাওড়া-কামারপাড়া রাস্তা, আজাগানা ইউনিয়নের খাটিয়ারঘাট-কালিয়াকৈর রাস্তা, ফতেপুর-বাসাইল রাস্তা, মহেড়া-বিলপাড়াসহ বেশ কয়েকটি রাস্তা ডুবে যাওয়ায় সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

আজ রবিবার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দুর্ভোগের এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১০৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫৫টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় তিনটি, কলেজ ৮টি ও ১৪টি দাখিল মাদরাসা রয়েছে। যমুনা ও ধলেশ্বরীর শাখা নদী বংশাই ও লৌহজং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফতেপুর, মহেড়া, জামুর্কি, বানাইল, ওয়ার্শি, আনাইতারা, বহুরিয়া ও লতিফপুর ইউনিয়নের শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। পৌরসভার মির্জাপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ, আলহাজ শফিউদ্দিন মিঞা এন্ড একাব্বর হোসেন টেকনিক্যাল কলেজ, আলহাজ শফিউদ্দিন মিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গোড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ড. আয়েশা রাজিয়া খোন্দকার স্কুল এন্ড কলেজ, কদিমধল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আগধল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিবিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘুগি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মারিশনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উফুলকী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১০৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্যা কবলিত।

এদিকে দীর্ঘদিন পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকার আজ ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা জারি করলেও মির্জাপুরে বন্যা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হওয়ায় স্কুল খোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে।

ভাওড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আমহজাদ হোসেন ও ফতেপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ জানান, টানা বৃষ্টি এবং নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাস্তা ডুবে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যার পানিতে ভাঙনের ফলে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘১৭০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬ টি বিদ্যালয়ের ভেতরে এবং ৮৭ বিদ্যালয়ের মাঠসহ আংশিক বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। স্কুল খোলা নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। তবে স্কুল খোলার বিষয়ে সকল প্রস্তুতি প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৫-২০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যা কবলিত ও ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য তাদের নির্দেশনা রয়েছে।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে এবং বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনের এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে তাদের সকল প্রস্তুতি রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত