চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান বিশেষ লকডাউন আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। আজ সোমবার বেলা পৌনে একটার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা শেষে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ এ ঘোষণা দেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, আগের ১১ দফা নির্দেশনার মধ্যে ছিল বাইরে থেকে কেউ জেলায় প্রবেশ করতে পারবে না। কিন্তু আম কিনতে আসা ব্যাপারীদের ক্ষেত্রে এ শর্ত শিথিল করা হয়েছে। তাঁরা যথাযোগ্য প্রমাণ দিয়ে জেলায় আম কিনতে আসতে পারবেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সার্বিক বিবেচনায় করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। সব মিলিয়ে সংক্রমণের হার ৩৪ শতাংশ বলা হলেও আরটি পিসিআরের ফলাফলে সংক্রমণের হার ৭১ শতাংশ। এ হার উদ্বেগজনক হলেও এ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল সাত দিন আগে। তিনি জানান, গতকাল রোববার রাতে পাওয়া ফলাফল থেকে জানা গেছে, আরটি পিসিআরে পাঠানো ৬৩টি নমুনার মধ্যে ৪৫ জনের মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে। অন্যদিকে, জিন এক্সপার্ট পরীক্ষায় ১০ জনে ৪ জন ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ২০৩ জনের মধ্যে ৪৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে শনাক্ত হয়েছে ২৭৬ জনে ৯৩ জন।
এদিকে লকডাউন কার্যকর করতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। আজ জেলার প্রবেশপথগুলোয় কড়া অবস্থান দেখা গেছে। দিনের প্রথম ভাগে প্রশাসনের কঠোর তৎপরতা থাকায় লোকজন বাইরে খুব একটা বের না হলেও মফস্বল এলাকাগুলোয় বিকেলের পর মানুষের মধ্যে লকডাউন মানার প্রবণতা বেশ কম। আজ সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার চাঁদলাই জোড়বাগান বাজারে দেখা যায়, মানুষ সবজি, গবাদিপশুর জন্য ঘাস, আম, লিচু কিনতে ব্যস্ত। অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। অনেককে আড্ডাও দিতে দেখা যায়।
এর আগে গতকাল গোধূলিলগ্নে শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ থেকে আসার পথে ইসরাইল মোড়, ছত্রাজিতপুর ও রানিহাটি বাজার, সদর উপজেলার রানিহাটি বাজারে ব্যাপক মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক ছিল না। ছিল না সামাজিক দূরত্ব।
জেলায় গত ঈদের পর থেকেই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি চলছিল। লকডাউন ঘোষণার আগে এক সপ্তাহে সংক্রমণের হার ছিল প্রায় ৫৯ শতাংশ। অন্যদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর বেশির ভাগই সীমান্তবর্তী শিবগঞ্জ উপজেলার। বিভিন্ন সীমান্তপথে অবৈধ চলাচলে করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ২৪ মে দুপুরে করোনা প্রতিরোধ জেলা কমিটির জরুরি সভা শেষে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে জেলাব্যাপী সাত দিনের লকডাউনের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ। ২৪ মে রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে লকডাউন কার্যকর হয়।