আমি একালের নেতা এমপিদের অনেকের পায়েই প্রাডা বা লুইস বুটন দেখি। বিমানের বিজনেস ক্লাসের সেলফি দেখি- আপনি কি দেখেন? সম্মানিত সাংসদ ইউসুফদের কি তারা চেনেন? না কি আপনি বা আপনারা যারা রাজনীতিতে সংখ্যালঘু তারা এসব লিখে বিবেকের ক্ষতে প্রলেপ দিতে চান?
পাঠকের কলাম (লিখেছেন অগ্রজ শফি আহমেদ): নেই কোনো প্রাসাদসম অট্টালিকা। নেই কোনো বিলাসবহুল খাট। ৫ ফুট প্রস্থ ও ১০ ফুট দৈর্ঘ্যের এক ছোট কক্ষেই কাটাচ্ছেন অসুস্থ জীবন। গত ১০ বছরে ঘুণে খাওয়া খাটেই মৃত্যুর প্রহর গুণছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ ইউসূফ। বর্তমান যুগে একজন সাংসদের বৃহৎ অট্টালিকা, দামি গাড়ি ও বিলাসবহুল থাকা একাবারেই স্বাভাবিক। আর সেখানে ভাঙা খাট, হুইল চেয়ার ও এক জোড়া কাপড়েই যেন জীবনের সমস্ত সুখ খুঁজে পেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এ নেতা।ব্যক্তি জীবনে নিঃস্ব এ নেতার নিজের নামে নেই কোনো জায়গা সম্পত্তি। পৈতৃক বাড়ি বলতে ছিল ছোট কুঁড়েঘর। নিজের পাওয়াটুকু দান করে দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে পটিয়ার কমান্ডার শাহ আলমের নেতৃত্বে মোহাম্মদ ইউসূফ ছিলেন একজন গেরিলা যোদ্ধা। বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও নিতেন না কোনো ভাতা।রোববার সরেজমিনে রাঙ্গুনিয়ার মরিয়মনগরের কলেজ রোডে গিয়ে সাবেক এ সাংসদের জীবন-যাপনের এমন দৈন্য-দশা দেখা যায়। বর্তমানে সৎ ভাইদের তত্ত্বাবধানে আছেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাংসদ থাকাকালীন সময়ে বাসে করেই যাতায়াত করতেন। ছিল না কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি। স্বাধীনতার পর টানা ২০ বছর টায়ার দিয়ে বানানো জুতোই পড়তেন তিনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের সময় এক আত্মীয়ের দেয়া পাঞ্জাবি-পায়জামা দিয়ে ৬ মাস কাটিয়েছেন।আদর্শবান এ রাজনৈতিক নেতা দল ও জনগণের কাজে সদা ব্যস্ত থাকতেন। ২০০০ সালে এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে, সেই বেশেই হঠাৎ একদিন মাকে দেখতে বাড়িতে আসেন। রাত কাটিয়ে আবারও পর দিন চলে যান মহান এ নেতা। রাজনীতির জন্য নিজেকে এতটাই উৎসর্গ করেছিলেন, যার কারণে বিয়েও করেননি তিনি।