পুলিশের অতিরিক্ত আইজি ডিএমপি ডিবির সাবেক প্রধান হারুন অর রশিদকে আটক করা হয়েছে। গতকাল দিনের কোনো এক সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় রাষ্ট্রীয় একটি সংস্থা। সেটি পুলিশ, র্যাব নাকি অন্য কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, তাকে অজ্ঞাত স্থানে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মূলত কার নির্দেশে অতিরিক্ত আইজিপি হারুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে আটকে রেখেছিলেন, তাদের কাছ থেকে জোর করে বিবৃতি আদায় করেছিলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে নির্বিচারে ঘরে ঘরে ডিবি পুলিশ পাঠিয়ে মানুষ তুলে আনার কাজটি করেছেন, রাজনীতিকসহ জনগণের সঙ্গে বেপরোয়া আচরণ করেছেন সেটি জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করতে গেলে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজকে দেখা করতে দেননি অতিরিক্ত আইজিপি হারুন। তখন বলেছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া দেখা করা সম্ভব নয়। তাদের কবে ছাড়া হবে জানতে চাইলে বলেছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন নির্দেশ দেবে তখন ছাড়া হবে।
সেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কে সেটিও হারুনের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হারুন এডিশনাল এসপি থাকার সময় ২০১১ সালের ৬ জুলাই, সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছিলেন।
সেই থেকে সমালোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা শেখ হাসিনার আনুকূল্য পেতে থাকেন, আর একের পর এক পদোন্নতি ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন হয় তার।
নানা অপকর্মের সঙ্গে তার যোগসাজশের পাশাপাশি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য সাধনে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ে বড় ভূমিকা ছিল হারুনের।
সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপি সমর্থন দেওয়ার পর গত ১৭ জুলাই দলের পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালান অতিরিক্ত আইজিপি হারুন। এরপর থেকে সেখানে আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
গত বছরের অক্টোবরে বিএনপির আন্দোলনের সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ধরে নিয়ে ডিবি অফিসে বেশ কয়েক ঘণ্টা আটকে রাখেন হারুন। তাকে জোর করে আপ্যায়ন করে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন।
একই ঘটনা ঘটে ছয় সমন্বয়ের সঙ্গে। তাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে চাউমিন খাওয়ানোর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়েন।