উত্তর সিটিতে মেয়রপ্রার্থী ৫ জন
ওয়ালিউল হাসনাত,সিটি রিপোর্টার,ঢাকা: আগামী এক বছরের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড নির্বাচনে আজ ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনের কারণে আজ ঢাকা সিটিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ জন্য গত বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি আগামী ১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত কোনো ধরনের মোটরবাইক চলাচল করতে পারবে না। উত্তরের ভোটারেরা নতুন মেয়র নির্বাচনে ভোট প্রদান করবেন। এই পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ডিএনসিসিতে মেয়র পদে প্রার্থী : ডিএনসিসি উপনির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেনÑ আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, লাঙল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ শাফিন আহমদ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি) থেকে শাহিন খান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নর্থ সাউথ প্রপার্টিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো: আব্দুর রহিম। মেয়র পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হচ্ছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, বুধবার রাত ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বেবিট্যাক্সি, ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও ডাক বিভাগের গাড়ি এই নির্দেশনার বাইরে থাকবে।
দুই সিটিতে কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা : ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি নির্বাচনে ৩৬টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিল পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩০৯ জন। দুই সিটিতে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থীর সংখ্যা ৭০ জন। এর মধ্যে ডিএনসিসির ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ১৬০ জন, সমসংখ্যক ওয়ার্ডে ডিএসসিসিতে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৪৯ জন। অন্য দিকে ডিএনসিসির ৬ সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৪৫ জন এবং ডিএসসিসিতে ২৫ জন। কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না।
ঢাকা উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ডে ভোটার ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৫১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ২২ হাজার ৭২৬ ও নারী ১৪ লাখ ২৫ হাজার ৭৮৪ জন। আর উত্তরে নতুন করে যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডে ভোটার ৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৮৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫ এবং নারী ২ লাখ ৮২ হাজার ৬৪৯ জন।
ঢাকা দক্ষিণের নতুন ১৮ ওয়ার্ডে ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৫ হাজার ৪১৬ এবং নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৯৪ জন।
মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োগ : মঙ্গলবার সকাল থেকে দুই সিটিতে টহল শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ২৬ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি কোস্টগার্ড ও র্যাব দায়িত্ব পালন করবে। ডিএনসিসিতে ২৫ প্লাটুন বিজিবি এবং ডিএসসিসিতে ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়াও দুই সিটির মধ্যে ডিএনসিসিতে চার প্লাটুন এবং ডিএসসিসিতে তিন প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।
প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংখ্যা : দুই সিটির প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকি) কেন্দ্রে ২৩ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে চারজন অস্ত্রধারী পুলিশ, তিনজন অস্ত্রধারী আনসার এবং ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে লাঠি হাতে। অন্য দিকে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৩ জনের মধ্যে ছয়জন অস্ত্রধারী পুলিশ, পাঁচজন অস্ত্রধারী আনসার এবং ১২ জন আনসার সদস্য থাকবে লাঠি হাতে অবস্থান করবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সেও সদস্যরা ভোটের দুই দিন আগে, ভোটের দিন এবং ভোটের পরের দিনসহ মোট চার দিন মাঠে থাকছে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোটকেন্দ্রের বাইরে র্যাব, পুলিশ ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই বছর পর ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক লন্ডনে মারা যান। এতে আসনটি শূন্য হয়। অন্য দিকে দুই সিটিতে ২০১৭ সালে ১৮টি করে ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নির্ধারিত সময়ের এক বছর পর গত ২২ জানুয়ারি দুই সিটির তফসিল ঘোষণা করে ইসি।