আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:০৬

দুই কিশোরীকে দেখতে বাড়িতে ভিড়

কিশোরীকে বিয়ে করার জন্য নোয়াখালী থেকে টাঙ্গাইলের বাসাইলে ছুটে এসেছে আরেক কিশোরী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দুই কিশোরীকে দেখতে ভিড় করছে এলাকার লোকজন।

গতকাল সোমবার (২১ মার্চ) বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ময়থা গাছপাড়া গ্রামের মেয়ে আঁখি আক্তারের (১৫) বাড়িতে ছুটে আসেন নোয়াখালীর সদর উপজেলার পূর্বলক্ষ্মীনারায়ণপুরের বিলকিছ আক্তার (১৭)।

আঁখি আক্তার ময়থা গাছপাড়া গ্রামের আজহার আলীর মেয়ে এবং স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বিলকিছ আক্তার নোয়াখালী সদর উপজেলার পূর্বলক্ষ্মীনারায়ণপুরের নুরুল হকের মেয়ে।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিলকিছ ও আঁখির পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা দেখাও করেছে।

স্থানীয়রা জানায়, প্রায় দুই বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে বিলকিছ ও আঁখির পরিচয় হয়। ফেসবুক মেসেঞ্জারে তারা নিয়মিত কথাবার্তা বলতো। দুই মাস আগে ঢাকার সাভারে এক আত্মীয়ের বাসায় রাত্রিযাপন করে এই দুই কিশোরী। সেখান থেকে সিরাজগঞ্জের চৌহালী এলাকায় গিয়ে থাকে তারা। পরে সেখানকার লোকজন দুই কিশোরীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে দুই পরিবারের কাছে তাদের ফিরিয়ে দেয়। এরপর গত রোববার (২০ মার্চ) ওই দুই কিশোরী ফোনে কথা বলে। তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে ওই দিন সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল শহরে আসে বিলকিছ। পরে আঁখি তাকে নিয়ে তাদের বাড়িতে যায়।

ঘটনাটি জানাজানি হলে আঁখিদের বাড়িতে লোকজনের ভিড় শুরু হয়। দুইজনকে একনজর দেখতে বাড়িতে আসছে মানুষজন। এমন পরিস্থিতিতে হতভম্ব আঁখির পরিবার।

আঁখি ও বিলকিছ বলে, ফেসবুকের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। আমরা কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারব না। প্রয়োজনে আমরা বাড়ি ছেড়ে গার্মেন্টসে চাকরি করে দুইজনে সংসার করে খাব।

আঁখির বাবা আজাহার আলী বলেন, আঁখি আমার পালিত মেয়ে। দেড় মাস বয়সে তাকে লালনপালন করতে এনেছিলাম। পালিত হলেও সে আমার খুবই আদরের সন্তান। নোয়াখালীর ওই মেয়েটিকে চলে যেতে বলছি বারবার, কিন্তু সে যাচ্ছে না। সে কিছুতেও আঁখিকে ছাড়া যাবে না। পরে বিলকিছের পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তার পরিবার নোয়াখালী থেকে রওনা হয়েছে। তারা আসার পর বিলকিছকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এছাড়া স্থানীয় প্রশাসনকেও ঘটনাটি জানানো হয়েছে।

ফুলকি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সেকান্দার আলী স্বপন জানান, নোয়াখালীর ওই কিশোরী গত রোববার রাতে এসেছে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। দুই কিশোরীর দাবি তারা কেউ কাউকে ছাড়া থাকবে না। তারা গার্মেন্টসে চাকরি করে একত্রে সারাজীবন কাটাবে বলে জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিলকিছ আঁখিকে জীবন সঙ্গী করবে বলে জানিয়েছে।

বাসাইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। নোয়াখালীর ওই মেয়েটির পরিবারকে তারা বিষয়টি জানিয়েছে। মেয়েটির পরিবার আসলে তাকে ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে।

বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি জানিয়েছেন। নোয়াখালীর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মেয়েটিকে প্রকৃত অভিভাবকের খোঁজ পেলে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। যদি পরিবার খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে আইনানুগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো সংবাদ