স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, পুলিশের কাজে বাধা ও হামলা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলার ষড়যন্ত্রসহ বিভিন্ন অভিযোগে খুলনা মহানগরীর ৫টি থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে। গত ৪ অক্টোবর রাতে নগরীর সদর, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়। সবগুলো মামলার বাদিই পুলিশ। এসব মামলায় মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, যে সব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে-এমন ঘটনা আদৌ ঘটেনি। বিএনপিকে চাপে রাখতে সারাদেশে যে গায়েবী কাল্পনিক মামলা চলছে-তারই অংশ হিসেবে নেতাদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা’ মামলা করা হচ্ছে।
নগরীর ৫টি থানা ও এজাহার থেকে জানা গেছে, নগরীর সদর থানায় দায়ের করা মামলার বাদি এস আই দেলোয়ার হোসেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ‘৪ অক্টোবর বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে পিকচার প্যালেস মোড়ে আসামিরা একত্রিত হইয়া বিক্ষোভ, ইজিবাইক ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলা করেছেন’।
এই মামলায় মহানগর যুবদলের সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু, নগর বিএনপির সহ প্রকাশনা সম্পাদক হাসানুর রশিদ মিরাজ, ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজির উদ্দিন আহমেদ নান্নু, সাধারণ সম্পাদক মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সদর থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি যুবদল সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারু বলেন, ‘শুধু পিকচার প্যালেস মোড় কেন-বৃহস্পতিবার সারা শহরে কোথাও কোন মিছিল হয়নি, ভাঙচুর হয়নি। সম্পূর্ণ কাল্পনিক গল্প সাজিয়ে এই মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, পিকচার প্যালেস মোড়ে পুলিশের একাধিক সিসি ক্যামেরা আছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যামেরা আছে। সেগুলো দেখলেই পুলিশের মিথ্যা গল্প ফাঁস হয়ে যাবে।’
তবে সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, ঘটনা ঘটেছে বলেই মামলা হয়েছে।
সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক জানান, গত ৩ অক্টোবর রাত ৯টা ৪০ মিনিটের সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার একটি কেপিআই এলাকা ধ্বংসের চেষ্টা ও সহায়তায় অভিযোগে ১৬ জনের রিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার বাদি সোনাডাঙ্গা থানার এস আই রণজিত কুমার বিশ্বাস।
এই মামলায় ছাত্রদলের মহানগর সভাপতি শরিফুল ইসলাম বাবু, সোনাডাঙ্গা থানার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম তুহিন, বর্তমান সভাপতি মাহাবুব হাসান পিয়ারুসহ ১৬ জনের নাম রয়েছে। অজ্ঞাত আসামি আরও ১৫০ জন।
সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ বলেন, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি।
দৌলতপুর থানায় দায়ের করা মামলার বাদি আসাদুজ্জামান নূর। এই মামলায় নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, দৌলতপুর থানা সভাপতি শেখ মুশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক নান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ আহসান তোতন, বিএল কলেজ ছাত্রদল সভাপতি রিয়াজ শাহেদসহ ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত পরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ১৪০/১৫০ জনকে।
দৌলতপুর থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘৪ অক্টোবর বিকাল সাড়ে ৫টায় দৌলতপুর শশিভুষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে মারামারি, যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা এবং বাধা দিতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা করেছেন আসামিরা। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।’
নগরীর খানজাহান আলী থানায় দায়ের করা মামলার বাদি এস আই বিধান চন্দ্র সানা। এই মামলা ২০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় ৬০/৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘৪ অক্টোবর বিকাল ৫টা ২৫ মিনিটে ফুলবাড়িগেট সোহাগ কাউন্টারের সামনে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল করে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।
নগরীর খালিশপুর থানায় দায়ের করা মামলার বাদি এস আই হাতিম আলী। এই মামলায় ৮/৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।