নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, দোকানপাট ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর এবং দুজন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনকর পরিস্থিতি এখন অনেকটা শান্ত। তবে নতুন করে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে, সে জন্য চৌমুহনীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় আছে।
আজ রোববার সকালে চৌমুহনীর ব্যাংক রোর্ডের রাধামাধব জিওর মন্দির ও রাম ঠাকুরের আশ্রম ঘুরে দেখা যায়, পুলিশ ও আনসারের সদস্যরা সতর্ক পাহারায় রয়েছেন। এ ছাড়া অন্যান্য মন্দিরের সামনে এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন আছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ কামরুল হোসেনের নেতৃত্বে বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা নিয়মিত টহলে রয়েছেন।
দুই দিন আগে হামলা-ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানগুলো এখনো বন্ধ। এ ছাড়া হামলা-ভাঙচুর হয়নি এমন অনেক দোকানও বন্ধ রাখা হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাম ঠাকুরের আশ্রম এলাকার একজন ব্যবসায়ী বলেন, গত শুক্রবার যে তাণ্ডব চলেছে, তা নজিরবিহীন ও অকল্পনীয়। এতে দীর্ঘদিনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের সম্পর্কে একটা চিড় ধরেছে। অনেকে এখনো আতঙ্কিত, তাই দোকান খুলছেন না।
এদিকে শুক্রবারের হামলা-ভাঙচুর ও দুজন ইসকনভক্ত নিহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। এ ঘটনায় আটক করা ৪৮ জনের তথ্য যাচাই–বাচাই করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামছুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, বেগমগঞ্জের চৌমুহনীর সার্বিক পরিস্থিতি এখন শান্ত। মন্দিরের সামনে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিজিবি ও র্যাবের সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন।
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে চৌমুহনী শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে কয়েক হাজার মুসল্লি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তাঁরা চৌমুহনী ডিবি রোডে (ফেনী-নোয়াখালী সড়ক) গিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের দোকানপাট, মন্দির ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় নিহত হন যতন সাহা (৪২) ও প্রান্ত চন্দ্র দাস (২৬)।