আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১২:৩৯

পরীক্ষা বাড়লেও দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে

দেশে করোনা শনাক্তের ১০৮তম দিনে পরীক্ষা বাড়লেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ২৯২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ হাজার ৪১২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৬৮ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ৫৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিল ৩ হাজার ৪৮০ জন। দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ১৯৮ জন। নমুনা পরীক্ষায় আজ শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম।
আজ দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন হেলথ বুলেটিনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৮৮০ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৭৯৮ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ১ হাজার ৬৭৮ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪৭ হাজার ৬৩৫ জন।
তিনি জানান, আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৪০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৪২ শতাংশ কম।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৫ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে দেশে মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৫৪৫ জন।
তিনি জানান, শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। গতকাল এবং আগের দিনও এই হার ছিল ১ দশমিক ৩০ শতাংশ।
ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫৬৩টি। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৬ হাজার ২৮৭টি। গতকালের চেয়ে আজ ১ হাজার ২৭৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৬৫টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ২৯২টি। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৫৫৫টি। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৭৩৭টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৬ লাখ ৪৪ হাজার ১১টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ, ৫ জন নারী। এদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ১০ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৫ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের ২ জন রয়েছেন। এদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা বিভাগের, ১৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ২ জন করে খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের এবং ১ জন করে বরিশাল ও সিলেট বিভাগের। ৩০ মারা গেছেন হাসপাতালে, ১২ জন বাসায় এবং ১ জনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৬৮০ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২১ হাজার ১১২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২২০ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৮ হাজার ১৮৫ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১২ হাজার ৯২৭ জন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৪১৪ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৬৬০ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ১৬৪ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ৮০ হাজার ৫১৪ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৬৪ হাজার ১৪৬ জন। দেশে কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘন্টায় বিতরণ হয়েছে ৩ হাজার ৫শ’ টি। এ পর্যন্ত সংগ্রহ ২৫ লাখ ২৮ হাজার ২৪৫টি। এ পর্যন্ত বিতরণ হয়েছে ২৩ লাখ ৬০ হাজার ৩১৪টি। বর্তমানে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩১টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭৪ হাজার ১৫৬টি এবং এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ২৭ লাখ ৭০ হাজার ১১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৯০ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ২ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা.নাসিমা সুলতানা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ১৫২ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ২৬ হাজার ৪৭৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২২ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৬৫৮ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ১৯১ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৫২১ জন এবং এ পর্যন্ত ১৭ হাজার ৭৩৪ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২২ জুন পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫২ হাজার ৩২৩ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ৩৩১ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ২৫ জন এবং এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৭৪০ জন বলে তিনি জানান।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা, সর্বদা মুখে মাস্ক পরে থাকা, সাবান পানি দিয়ে বারবার ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে গেলে হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার, বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার, ভিটামিন সি ও ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, ডিম, মাছ, মাংস, টাটকা ফলমূল ও সবজি খাওয়াসহ শরীরকে ফিট রাখতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়।
তিনি বলেন, ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ তা অতিরিক্ত ঝুঁকি তৈরি করে।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত