মুনতাসির মামুন, যশোর থেকে : যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত ধুড় পাচার ও চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রধান বহুল আলোচিত হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেনা পুলিশ।
জানা গেছে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সিন্ডিকেট প্রধান হাবিব বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি একজন কুখ্যাত চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ী। তার নেতৃত্বে পুটখালি সীমান্ত দিয়ে ধুড় নারী/পুরুষ ও শিশু অবৈধ পথে ভারতে পাচার হচ্ছে। এছাড়া হাবিবের নেতৃত্বে ভারত থেকে আসছে মাদকের বড় বড় চালান ও আগ্নেয়াস্ত্র। পুটখালী সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট পরিচালনার জন্য তার রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী। এই বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্যে সাংবাদিক নির্যাতন,ধর্ষণ সহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের উদাসিনতা হতবাক করে দিয়েছে স্থানীয়দের।
গেল ৯মার্চ শনিবার রাতে যশোরের শার্শা উপজেলার আলোচিত বেনাপোলের পুটখালী সীমান্ত ধুড় পাচার ও চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিবেব লালিত ৯ জন সদস্য দুই যুবতীকে ধর্ষণের করে। ওই যুবতীদের বাড়ি কুষ্টিয়া ও চাঁদপুর জেলায়। যুবতীদের পুটখালী সীমান্ত দিয়ে হাবিব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদেরকে কৌশলে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়। খবর পেয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ করিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম পুটখালী গ্রামে অভিযান চালায়। পুলিশ কৌশলে অভিযান চালিয়ে ধর্ষিত দু যুবতীকে উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে আটক করে। তবে বুঝতে পেরে ঘটনার মূল নায়ক ছাত্রলীগ নেতা রাফিউল পালিয়ে যান। আটক ৬ জন হলেন পুটখালী গ্রামের আলোচিত হাবিব সিন্ডিকেটের সদস্য আব্দুল খালেকের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২), আলমগীর হোসেনের দুই ছেলে সোহেল (২০) ও আরিফ (১৮), শামসুল কসাইয়ের ছেলে মোরশেদ(২৫), মোরশেদ আলীর ছেলে শিমুল(২২) ও আয়ুব আলী বিশ্বাসের ছেলে প্লাবন(১৮)। পরদিন১০ মার্চ রোববার ধর্ষিত এক যুবতী বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ১৫। তারিখ ১০/০৩/১৯। পুলিশ এদিন আটক আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
স্থানীয়রা জানান ছাত্রলীগ নেতা রাফিউলের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটলেও মূল ইন্ধনকারী হলেন পুটখালী চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব। তাদের দাবি, প্রায়ই সীমান্ত এলাকায় তার লোকজন দ্বারা মহিলা ও যুবতীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। তারা হাবিবের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। অন্যদিকে ছাত্রলীগ নেতা রাফিউলকে পুলিশ এখনও আটক করতে না পারায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায় ,কুখ্যাত হাবিব দু যুবতী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত তার লোকজনকে রক্ষা করতে মোটা অংকের টাকা ছড়িয়েছেন। এ ব্যাপারে এ মামলার তদন্তকারী অফিসার বেনাপোল পোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সব গুজব লেনদেনের ঘটনা সত্য নয়।
এদিকে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত থাকার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে যশোর থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক কল্যাণের সীমান্ত প্রতিবেদক সাগর হোসেন মুন্না ও তাঁর সহকর্মী শষী (২৩) এর মটর সাইকেল যার নাম্বার ( যশোর- হ- ৪৭-১১১৫) ছিনিয়ে নেয় হাবিব। এবং শষীকে মাদক মামলা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেন শষী এখনো জেল হাজতে রয়েছেন। গেল ২৯ মার্চ শুক্রবার সাংবাদিক মুন্নাকে তাঁর নিজ অফিসে ডেকে এনে বেধড়ক মারপিট করেন হাবিব।
এ ব্যাপারে হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে হাবিব সকল ব্যাপারে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। সাংবাদিক পেটালেন কেন ? প্রশ্নের জবাবে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন এবং ফের সাংবাদিক সাগর হোসেন মুন্না কে দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেন। উল্লেখ্য ছিনতাই কৃত মটর সাইকেলটি ( যশোর- হ- ৪৭-১১১৫) হাবিবের আশ্রিত সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করছে।