ডেঙ্গু মশার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পেতে পুরুষ এডিস মশাকে বন্ধ্যাকরণের মাধ্যমে এডিস মশার বংশ হ্রাস করার পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে।
আশুলিয়ায় সাভার পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এটি উদ্ভাবন করেছে।
পদ্ধতিটি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাভারস্থ পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের কীট প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাজলা শেহেলি, ড. মাহফুজা মোমেন ও ড. নাহিদা সুলতানা এটি উদ্ভাবন করেছেন।
শনিবার সকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান আশুলিয়ায় সাভার পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি) ও জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন।
সাংবাদিকদের মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক এনআইবি দেশে বিদ্যমান ও বিলুপ্তপ্রায় জেনেটিক রিসোর্সগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ, সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও ব্যবহারের মাধ্যমে এর সুফল দেশ ও মানুষের কল্যাণে প্রয়োগ করতে জাতীয় জীন ব্যাংক স্থাপন শীর্ষক উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মেয়াদকাল ২০১৮ জুন থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৫০৪ কোটি টাকা।
এ সময় তিনি আরও বলেন, স্ত্রী এডিস মশা ডেঙ্গু রোগ ছড়ায়। তাই মশার বংশবিস্তার রোধে পুরুষ এডিস মশাকে গামা রশ্মির মাধ্যমে বন্ধ্যাকরণ করা হয়। এ সব বন্ধ্যা পুরুষ মশা স্ত্রী এডিস মশার সঙ্গে মিলিত হলে ওই মশার ডিম বা লার্ভা নিষিক্ত না হওয়ায় মশা বংশবিস্তার হবে না।
আন্তর্জাতিকভাবে বৈজ্ঞানিকদের এডিস মশার বন্ধ্যাকরণের মাধ্যমে বংশবিস্তার হ্রাস করার এ পদ্ধতিটি একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। তাই এ পদ্ধতিকে অতি শিগগিরই সারা দেশে প্রয়োগ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এ সময় কমিশনের চেয়ারম্যান মাহাবুবুল হক, সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. সানোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড. এম আজিজুল হক, এনআইবির মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহসহ পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এডিশ মশা বন্ধ্যাকরণ পদ্ধতিটি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাভারস্থ পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের কীট প্রযুক্তি বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাজলা শেহেলি, ড. মাহফুজা মোমেন ও ড. নাহিদা সুলতানা উদ্ভাবন করেছেন।
জানতে চাইলে এনআইবির (ল্যাব) পরিচালক ড. আফতাব হোসেন জানান, উদ্ভাবিত বন্ধ্যাত্বকরণ এডিশ মশাগুলোকে ঢাকাসহ শহরকেন্দ্রিক প্রয়োগ করা হবে।
কবে নাগাদ এটি প্রয়োগ করা হবে সে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেহেতু গবেষণা কাজে সফল হয়েছে এখনও বিভিন্ন সেক্টরের কাজ বাকি রয়েছে। তবে সরকার চাইলে এবং টেকনিক্যাল কাজে সহায়তা পেলে অন্তত ৩ বছরের মধ্যে এটি প্রয়োগ করা যাবে।