রায়হান সিকদার: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুঁতে রাখা বোমার খোঁজ দিয়ে ৫০ লাখ টাকা পেলেন চায়ের দোকানদার বদিউজ্জামান সরদার। গত ২৭ জানুয়ারি বদিউজ্জামান সরদার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেখা করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন।
২০০০ সালের ২০ জুলাই। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জনসভা করার কথা ছিল। কিন্তু সেদিনের সভাস্থলে হুজি নেতা মুফতি হান্নান ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। তবে তার সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
জনসভার আগেরদিন সকালে সভাস্থলের পাশের চায়ের দোকানদার বদিউজ্জামান সরদার পুকুরে চায়ের কেতলি ধুতে গিয়ে একটি তার দেখতে পান। আশপাশের লোকজনকে ডেকে বদিউজ্জামান সেই তারটি দেখান। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ছুটে আসেন। শুরু হয় তল্লাশি। সন্ধান মেলে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা। সে যাত্রায় বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর কেটে গেছে প্রায় ১৮টি বছর। বদিউজ্জমান সরদার শত চেষ্টা করেও শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। পরপর তিনবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসায় কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার ভাগ্যের চাকা ঘুরলেও ঘোরেনি বদিউজ্জামান সরদারের ভাগ্যের চাকা।
গত ২৭ জানুয়ারি বদিউজ্জামান সরদার উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সোহরাব হোসেন হাওলাদারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন।
সোহরাব হোসেন হাওলাদার বলেন, গত ২৭ জানুয়ারি বদিউজ্জামান সরদারকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করি। তিনি উদার মনে বদিউজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর গত রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে বদিউজ্জামানের হাতে ৫০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
বদিউজ্জামান সরদার বলেন, দীর্ঘ ১৮ বছর আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনও নেতাই আমাকে তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেননি। সর্বশেষ সোহরাব হোসেন আমাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেন। প্রধানমন্ত্রী মন খুলে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি আমাকে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছেন। তার এই মহানুভবতায় আমি অত্যন্ত খুশি। দোয়া করি আল্লাহ যেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালো রাখেন। প্রধানমন্ত্রী যেন এভাবে দেশবাসীর সেবা করে যেতে পারেন।