আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৫৬

প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাচ্ছেন কাল- সফর সঙ্গী এসএম কামাল সহ গণ্যমান্যরা।

হাসনাত জামিল, (ঢাকা অফিস): ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে তার এ সফর। এ ব্যাপারে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এসএম কামাল হোসেন জানান,
তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তি নিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সমাবর্তন ও আসানসোলে অবস্থিত কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে যোগ দেবেন। কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার (ডি.লিট) উপাধিতে ভূষিত করা হবে।

এছাড়া তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনায় বসবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলেও নিশ্চিত করেন এমএম কামাল হোসেন।

বুধবার খানজাহান আলী24.com কে প্রধানমন্ত্রীর সফর তথ্য জানান এসএম কামাল হোসেন।

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী। তবে সময়সীমা দিতে পারছি না। অতীতেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠিয়েছি। আমাদের পাশে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো আছে।

তিনি বলেন, ২৫-২৬ মে প্রধানমন্ত্রীর পশ্চিমবঙ্গ সফরের সময় প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও গণমান্য ব্যক্তিরা থাকবেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২৫ মে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি থাকবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। একই দিন সকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়মিত সমাবর্তনে গেস্ট অব অনার হিসেবে থাকবেন। এ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধান অতিথি থাকবেন।

এরপর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনায় বসবেন। বৈঠকে মমতা ব্যানার্জি উপস্থিত থাকবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের সময় ঠিক করা হয়েছে। তবে ওই বৈঠকে কী আলোচনা হবে, মমতা থাকবেন কি না, সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

সফরের শেষদিন কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডি.লিট উপাধিতে ভূষিত করা হবে। এ অনুষ্ঠানে মমতা থাকতে পারেন।

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ভবন’ বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে। ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি ভারতীয় রুপি। এ ভবন রক্ষণাবেক্ষণ ও সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১০ কোটি রুপির সমতুল্য একটি এককালীন স্থায়ী তহবিল গঠন করা হয়েছে।

এ তহবিলের অর্জিত লভ্যাংশ থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশের দশজন শিক্ষার্থীকে এমফিল ও পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জনের ফেলোশিপ দেয়া হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাংলাদেশ ভবন নির্মাণ-পরবর্তী পরিচালনা কার্যক্রম সংক্রান্ত’ একটি সমঝোতা স্মারক সই হবে।

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও  এসএম কামাল হোসেন জানান, ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি ও সফরের শেষদিন ২৬ মে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর স্মৃতিবিজড়িত কলকাতাস্থ নেতাজী মিউজিয়াম পরিদর্শন করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে আগামী নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হবে কি না- এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের বড় ও প্রধান প্রতিবেশী। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অনেক অবদান ছিল। আমরা তা ভুলতে পারি না।

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ বাড়ছে। রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসেছেন। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।

এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার পর কোথায় থাকবে, সেই অবকাঠামো তৈরির জিনিসপত্র দুই মাস আগে সেখানে পাঠিয়েছে ভারত। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান এত সহজ নয়। এটা অনেক কঠিন।

সবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন এসএম কামাল হোসেন।

আরো সংবাদ