ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের শিশুপুত্র আল রাফসানকে (১০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বাড়িতে ঢুকে এক ব্যক্তি শিশুটিকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই সময় ইউপি চেয়ারম্যানে স্ত্রী দিলজাহান বেগম রত্মা (৩৫) এগিয়ে এলে তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাফসানের খুনি এরশাদ মোল্যা স্থানীয় আটরশি টেলিফোন টাওয়ার থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে। বুধবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটের দিকে সদরপুর উপজেলা পোস্ট অফিসের সামনে ইউপি চেয়ারম্যানের শ্বশুরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী আল রাফসান ও দিলজাহান বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আল রাফসানকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দিলজাহানের অবস্থা গুরতর হওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতাল ফরিদপুরে পাঠানো হয়েছে।
সত্যতা নিশ্চিত করে সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওমর ফয়সাল বলেন, রাফসানকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। দিলজাহানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থনান্তর করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, চাপাতি দিয়ে এ ঘটনাটি এক ব্যাক্তি ঘটিয়েছেন। তার নাম এরশাদ মোল্লা (৩৫)। তিনি ঢেউখালী ইউনিয়নের ঢেউখালী মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপে সদরপুর ইউপি নির্বাচন হয়। ওই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। মিজানুর রহমান দুই ছেলের বাবা। তার ছোট ছেলের নাম আল রাফসান। রাফসান স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ঘটনার সময় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ’র ভাইয়ের কুলখানী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।
এলাকাবাসী জানায়, সম্প্রতি বিবাহবিচ্ছেদ-সংক্রান্ত একটি শালিস সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ হন একটি পক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে জখম করায় ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে রাফসান ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান। তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, আটরশি টেলিফোন টাওয়ারে ওঠে গ্রেপ্তার এড়াতে চেয়েছিল রাফসানের ঘাতক এরশাদ মোল্যা। একপর্যায়ে সে অনেক উঁচু থেকে লাফিয়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।