যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ডেস্ক ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি অবমাননা ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করায় মানহানির হয়েছে দাবি করে আদালতে দুটি মামলা হয়েছে।
সোমবার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৃথক দুটি অভিযোগ করেন। বিকেলে বিচারক মুহাম্মদ আকরাম হোসেন কোতোয়ালি থানার ওসিকে তদন্ত করে আগামী ১৩ মে মধ্যে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দিয়েছেন।
এ অভিযোগে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরর্ণ দাবিতে করা মামলায় বিবাদী করা হয়েছে উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে।
পাঁচ শত কোটি টাকার মানহানির মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানকে বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে দুটি মামলার বাদী আনোয়ার হোসেন বিপুল অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি পরিকল্পিতভাবে বিকৃত করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবির ওপর নিজের নাম লিখে রাখেন ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন। আর চলতি বছর আরো ভয়ঙ্করভাবে ডেস্ক ক্যালেন্ডারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির উপস্থাপনা করা হয়েছে ।
তিনি বলেন, ডেস্ক ক্যালেন্ডারের ছবিতে ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন নিজেকে খুব স্মার্টভাবে উপস্থাপন করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছিদ্র করে দিয়েছেন। একজন বাংলাদেশি হিসেবে, স্বাধীনতার সপক্ষের মানুষ হিসেবে, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এটাকে মেনে নেয়া যায় না। তাই এর সঙ্গে জড়িত ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি করছি। এজন্য যশোর আদালতে মামলা করেছি।
দুই শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা প্রসঙ্গে আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক নাজমুল হাসান রীতিমত মিথ্যাচার করে পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন যা ১৩ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
বিপুল বলেন, তারা দাবি করেছেন, মশিয়ুর রহমান হলে আসবাবপত্র সরবরাহ কাজ আমি করেছি। টেন্ডার অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ না করে নিম্নমানের পণ্য দেয়া হয়েছে। তাই আপত্তি তুলে বিল আটকে দিয়েছেন ইকবাল কবীর জাহিদ। এজন্য আমি তাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়েছি। কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে, আমি শহীদ মশিয়ুর রহমান হলে আসবাবপত্র সরবরাহে ঠিকাদারের কাজ করিনি। শুধু এটি নয়, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের ঠিকাদারে জড়িত নই। ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতা হিসেবে ক্যাম্পাসে নৌকা নামিয়ে ফেলা এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালি দেয়ার কারণ জানতে আমি ইকবাল কবির জাহিদ স্যারের কাছে ফোন করেছিলাম। ফোনে তাকে হুমকি দেয়া তো পরের কথা, আমি উত্তপ্ত কোনো কথাও বলিনি। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে এই দুই শিক্ষক রীতিমত আমার মান সম্মান ক্ষুণ্ন করেছেন। এজন্য আমি আজ আদালতে তাদের বিরুদ্ধে মানহানিরা মামলা করেছি।
সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসনের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের নানা অনিয়মের সিন্ডিকেটর নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ। তাদের শাস্তি দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকুল হোসাইন, ছাত্রলীগের যশোর শহর শাখার আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রনি, চৌগাছা শাখার সভাপতি ইব্রাহিম হুসাইন, সাধারণ সম্পাদক শফিকুজ্জামান রাজু, কেশবপুর শাখার আহ্বায়ক কাজী আজাহারুল ইসলাম, সরকারি এমএম কলেজ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত তরুণ প্রমুখ।