আজ - শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - দুপুর ১:৪৭

বন্যায় ‘ভাসমান বীজতলা’ সফলতা পেয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা

ঝালকাঠিতে বন্যায় পানি উঠে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করেছে। এর মধ্যে আমনের বীজতলাই বেশি। এ অবস্থায় কৃষকরা যখন দিশেহারা, তখন কৃষি বিভাগের পরামর্শে জলাবদ্ধ ক্ষেতেই ভাসমান বেডে বীজতলা করা হয়। সেই বীজতলাই এখন আশা জাগাচ্ছে কৃষকের মনে।

কৃষি বিভাগ বলছে, বন্যা সহিষ্ণু ভাসমান বেডে যারা বীজতলা করেছেন, তাদের ফসলের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরং তাদের কাছ থেকে বীজ নিয়ে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন অন্য কৃষকরা।

কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি জেলায় চলতি আমন মৌসুমে দুই শতাধিক বন্যা সহিষ্ণু ভাসমান বীজতলা তৈরি করে ইতোমধ্যেই সফলতা পেয়েছেন প্রান্তিক কৃষকরা। এর মধ্যে কৃষি বিভাগের অর্থায়নেই করা হয়েছে ১২০টি। বন্যার পানিতে তাদের বীজতলার ক্ষতি হয়নি। কলাগাছের ভেলায় তৈরি এসব বীজতলায় এখন সোনালী ধানের স্বপ্ন বুনছেন তাঁরা।

কৃষকরা জানায়, অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ডুববে না। সেচের প্রয়োজন পড়বে না। কীটনাশক ছিটাতে হবে না। এমনকি সারেরও প্রয়োজন হবে না। এমন বীজতলা এত দিন ছিল কৃষকদের স্বপ্নে। সেই স্বপ্নের বীজতলা বাস্তবেই তৈরি করছেন তাঁরা। বন্যা ও বৃষ্টির জন্য যেসব এলাকার বীজতলা পানিতে ডুবে আছে, সেসব জায়গায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কলাগাছের ভেলায় ভাসমান বীজতলা তৈরি করে চারা উৎপাদন করে সফল হয়েছেন কৃষকরা। এই আমনের চারা রোপনকারী কৃষকদের চাহিদা পূরণ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝেও বিতরণ করা হয়।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভাটারাকান্দা গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, আমি কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে চারটি বেডে ভাসমান বীজতলা করেছি। এ বীজ এখন বপণ করছি। বন্যায় ক্ষেতে যে জলাবব্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানেই এ বীজ করা হয়। এখন পানি কমে গেছে, তাই বীজ বপণ শুরু করেছি।

নলছিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসরাত জাহান মিলি বলেন, আমরা বন্যার সময় মাঠে গিয়ে কৃষকের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি। কৃষকরা যাতে ভাসমান বেডে বীজ করতে এ জন্য তাদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। এখন ভাসমান বেডের বীজ দিয়েই তাঁরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে।

ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফজলুল হক বলেন, ঝালকাঠি জেলায় আমরা ১২০টি ভাসমান বেডে আমনের বীজ করার জন্য কৃষকদের নগদ টাকা দিয়েছি। তাঁরা বীজ করে সফলতা পেয়েছেন। সরকারের উচিত এ ধরণের বীজতলা করার জন্য আরো বেশি বরাদ্দ দেওয়ার। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা গেলে, নিজেরাই পরে ভাসমান বেডে বীজতলা করবেন।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত