বিচারকের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে বেনাপোলের কাগজ পুকুরের মেসার্স তনিমা ফিলিং স্টেশন দখলে ব্যর্থ হয়ে বাগআঁড়ার কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন দখল করে নিয়েছে জালিয়াত চক্রের হোতা আনোয়ার হোসেন ও তার লোকজন। কিবরিয়া ফিলিং স্টেশনের দলখদারিত্ব ঠেকাতে যেয়ে অপহরণের শিকার হন তিন ভাইসহ গাড়িচালক। এ ঘটনায় মামলা করে চরম বিপাকে পড়েছেন ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী তনিমা তাসনুভা ও তার পরিবারের সদস্যরা। আসামিরা মামলা তুলে নিতে ও পাম্প ছেড়ে দেয়ার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া দিচ্ছে।
তনিমা ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী তনিমা তাসনুভার অভিযোগে জানা গেছে, বেনাপোলের কাগজ পুকুরের মেসার্স তনিমা ফিলিং স্টেশন ও বাগআঁচড়ার কিবরিয়া ফিলিং স্টেশনের মালিক তার পিতা গোলাম কিবরিয়ার। তার মৃত্যুর পর এই দুই ফিলিং স্টেশনের মালিক হন তার ওয়ারেশরা।
পৈত্রকি সূত্রে মালিকানা লাভ করে তনিমা তাসনুভা দীর্ঘদিন ধরে তনিমা ফিলিং স্টেশন ও তার পিতার নামে বাগআঁচড়ার কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন পরিচালনা করে আসছেন।
শার্শার বসতপুর গ্রামের আনেয়ার হোসেন ও জামাল হোসেন পরষ্পর যোগসাজসে ইব্রাহিম হোসেনের সহায়তায় ফিলিং স্টেশনের মালিক গোলাম কিবরিয়া ও বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে একটি এফিডেভিট তৈরী করে। আনোয়ার হোসেন ও তার সহযোগীরা ভুয়া এফিডেভিটের দেখিয়ে মেসার্স তনিমা ফিলিং স্টেশন দখলের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি তনিমা তাসনুভা জানতে পেরে আদালতের দ্বারস্থ হন। পরে আদালতের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামিদের প্রদর্শিত এফিডেভিট ভুয়া এবং এতে বিচারকের স্বাক্ষর ও সিল জাল। আদালতের পরমর্শে গত ২৭ নভেম্বর তনিমা তাসনুভা জাল এফিডেভিট দিয়ে পাম্প দখনের চেষ্টার অভিযোগে ৩ জনের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে মামলা করেন। অভিযোগটি আদালতে আদেশে গত ৩ ডিসেম্বর বেনাপোল পোর্ট থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে।
আসামিরা হলো, শার্শারর বসতপুর গ্রামের দুদু মিয়ার দুই ছেলে আনোয়ার হোসেন ও জামাল হোসেন এবং ভবেরবেড় গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম হোসেন।
এদিকে আনোয়ার হোসেন ও তার লোকজন তনিমা ফিলিং স্টেশন দখলে ব্যর্থ হয়ে বাগআঁচড়ার মেসার্স কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন দখল করে নিয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর মরহুম গোলাম কিবরিয়ার তিন ছেলে বাগআঁচড়ার ফিলিং স্টেশন দেখতে যান। গিয়ে দেখেন আনোয়ার ও তার লোকজন পাম্পটি দখল করে কিবরিয়া ফিলিং স্টেশন মুছে আনোয়ার ফিলিং স্টেশন নামের সাইবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। এরপর প্রতিবাদ করায় আনোয়ার হোসেন ও তার লোকজন মরহুম গোলাম কিবরিয়ার তিন ছেলে ও গাড়ি চালককে মারপিট ও অপহরণ করে জামতলা বাজারে নিয়ে যায়। তনিমা তাসনুভা এ সংবাদ জানতে পেয়ে ঘটনাস্থলে যেয়ে পুলিশের সহযোগীতায় তিন ভাই ও ড্রাইভারকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে শার্শা থানায় একটি মামলা করেছেন।
মেসার্স তনিমা ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী তনিমা তাসনুভা জানিয়েছেন, দখলদার আনোয়ার ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। গত ১৮ নভেম্বর ঘটনার বিস্তারিত অবহিত করে ও প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছি। মামলায় আসামিরা অব্যহত ভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। যে কোন সময় আমার ও আমার ভাইদের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে আসামিরা। তিনি অবিলম্বে আসামিদের আটক করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জনিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।