করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার। তবে এই বিধিনিষেধের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে দোকানপাট ও বিপণিবিতান। সে কারণে ঈদের পর অনেক এলাকার কিছু কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। আবার ঈদের ছুটির কারণে এখনো বন্ধও আছে অনেক দোকানপাট ও বিপণিবিতান।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গতকাল রোববার এক প্রজ্ঞাপনে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বৃদ্ধি করে। আজ সোমবার থেকে তা থাকবে ২৩ মে মধ্যরাত পর্যন্ত। এই সময়ে চলমান বিধিনিষেধের শর্তগুলো বহাল থাকবে। এ জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটির মেয়াদও আরেক দফা বাড়ানো হয়।
ঈদের ছুটির পর গতকালই রাজধানীর কিছু কিছু দোকানপাট খুলেছে। তবে আজ দোকানপাট খোলার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে বড় কোনো বিপণিবিতান খোলেনি। সেগুলো আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবার থেকে খুলতে শুরু করবে।
এদিকে গতকালের প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে কিছু বলা না থাকায় দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা থাকবে কি না, সেটি নিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনের পর অনেকেই জানতে চান দোকানপাট ও মার্কেট খোলা যাবে কি না। সেটি পরিষ্কার হতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে গত রাতে আমার মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। তিনি (প্রতিমন্ত্রী) জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও মার্কেট খোলা যাবে।’বিজ্ঞাপন
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, অধিকাংশ বিপণিবিতানে ঈদের ছুটি চলছে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে সেগুলো খুলবে। তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
রাজধানীর নিউমার্কেট আগামী বুধবার থেকে খুলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিউমার্কেট এলাকার সাপ্তাহিক ছুটি মঙ্গলবার। তার পরদিন, অর্থাৎ বুধবার থেকে মার্কেট খোলার বিষয়ে আমাদের আগে থেকেই নোটিশ দেওয়া আছে।’
দেশে হঠাৎ করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে গত ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এ সময়ে শিল্পকারখানা, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যাংক স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধ রাখার কথা বলা হয়। পয়লা বৈশাখ ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ব্যবসার ভরা মৌসুমে দোকানপাট বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঢাকার নিউমার্কেট, গাউসিয়া, মিরপুর, গুলিস্তানসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভে নামেন।
তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা রাখার দাবি জানান। পরে সরকার পয়লা বৈশাখের আগে ব্যবসা করার সুযোগ দিতে দোকানপাট ও বিপণিবিতান খুলে দেওয়া হয়।
করোনা সংক্রমণ না কমায় পরে ১৪ এপ্রিল থেকে বিধিনিষেধ আরও কড়াকড়ি করা হয়। দোকানপাট ও বিপণিবিতান আবারও বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২৫ এপ্রিল থেকে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলার অনুমতি দেয় সরকার।
প্রথম দিকে রাত আটটায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের কড়াকড়ি থাকলেও পরে অনানুষ্ঠানিকভাবে তা শিথিল করা হয়। ফলে, ঈদের আগে গভীর রাত পর্যন্ত দোকানপাট ও বিপণিবিতান খোলা রেখে ব্যবসা করার সুযোগ পান ব্যবসায়ীরা।