স্টাফ রিপোর্টার।। যশােরের বালিয়া ভেকুটিয়ায় খুনী চক্রের হত্যাচেষ্টার শিকার আল আমিন ঢাকায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
চিকিৎসার পরও তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। বামপাশ ব্লক হয়ে গেছে। হাত পা নড়ছেনা। কাউকে চিনতেও পারছেননা। ব্রেনে অস্ত্র পচার করতে এখন ১১ লাখ টাকা প্রয়ােজন।
ঘটনার পর থেকে তাকে জানানাে হয়নি বাবার সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সহােদর রাসেলকে ওরা খুন করে ফেলেছে ।
গত ১৫ এপ্রিল রাতে যশােরের ভেকুটিয়া শ্মশান পাড়ার আবু সালেক মৃধার ছেলে বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ যশােরের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমদ রাসেলকে তুলে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করে এলাকার চিহ্নিতরা। ঘটনার আগে ভাইকে ঠেকাতে গেলে সহােদর আল আমিনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে ফেলে যায় সন্ত্রাসীরা। গুরুতর জখম আল
আমিনকে প্রথমে যশাের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়। রাসেলের খুনীদের ও আল আমিনের হত্যা চেষ্টাকারীদের আটকের দাবি জানিয়ে ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু ছাত্রপরিষদ ও এলাকার মানুষ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে।
ঘটনার পর ১৬ এপ্রিল রাতে বাবা আবু সালেক এলাকার চিহ্নিত ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন। আসামি করা হয় বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের মৃত শাহাদত হােসেনের ছেলে যুবলীগ নেতা শহিদুজ্জামান শাহীদ, বালিয়া ভেকুটিয়া মাঠপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলাম মঙ্গলের ছেলে সামিরুল ইসলাম (২৮), বালিয়া ভেকুটিয়া মাধঘােপাড়ার
ফজলুর রহমানের ছেলে পিচ্চি বাবু (২৪), বালিয়া ভেকুটিয়ার আল-আমিন সিদ্দিকুর রহমান ওরফে শিয়াল সিদ্দিকের ছেলে শাহিন, বালিয়া ভেকুটিয়ার শ্মশান পাড়ার শানু ফকিরের ছেলে সােহাগ, সাগর ও সােহেল, দ্বীনছে আলীর ছেলে জনি, মৃত রুহুল আমিনের ছেলে সেলিম, ইদ্রিস আলী ওরফে মাদ্রাজের ছেলে আমির হােসেন, বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের মৃত শাহাদতের ছেলে শামীম, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের রন্টু মিয়ার ছেলে শাস্তু, দুলাল মিয়ার ছেলে আজাদ, মােশারফ হােসেন ওরফে গুজুর ছেলে আশিক, চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে ওমর আলী, বালিয়া ভেকুটিয়ার মিয়ারাজ মােড়লের ছেলে ইমদাদুল হক এম.এ, বালিয়া ভেকুটিয়া মাধঘােপ পাড়ার মৃত সেকেন্দার আলী সেগুনের ছেলে খায়রুল ইসলাম,একই এলাকার আকরাম আলীর ছেলে হাসিব, আবু তাহের ড্রাইভারের ছেলে সবুজ হােসেন, মৃত সলেমান মন্ডলের ছেলে রেজাউল ইসলাম,পাকদিয়া গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে আলমগীর হােসেন, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মােসলেম সরদারের ছেলে রমজান আলী সরদার, বড় ভেকুটিয়া গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে এনামুল এবং আবুল হােসেনের ছেলে মতিয়ার রহমানসহ অজ্ঞাত ৭/৮জনকে। এঘটনায় বাদী পরিবার ও স্থানীয়দের সহযােগিতায় পুলিশ মামলার নয় আসামিকে আটক করেছে। কিন্তু প্রধান আসামি শহিদ ও হত্যা মিশন সদস্য সামিরুল আটক না হওয়ায় বাদী পরিবারের শংকা কাটছেনা। তারা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, তার এক ছেলে রাসেল খুন হয়ে গেছে।
অপর ছেলে আল আমিন খুন না হয়েও মৃত্যর পথে। আড়াই মাস চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ স্বাভাবিক করতে পারছেননা। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকা ৩/৪টি নামি হাসপাতালে তার চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এখন তার বাম পাশ ব্ক, হাত পা নড়া চড়া করেনা, কাউকে চিনতে পারছেন। এছাড়া ভাই রাসেল যে মারা গেছে সে খবরটিও তাকে অদ্যবধি দেয়া হয়নি। ডাক্তার জানিয়েছেন তার ব্রেনে অস্ত্রপচার করতে হবে। ১১ লাখ টাকা খরচ হবে। আবার তাতে সুস্থ হবে এমন গ্যারান্টি দেননি চিকিৎসক। এখন জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে যাচ্ছে ছেলে আলআমিন । বাবা হয়ে কষ্টের দৃশয দেখতে হচ্ছে। সারা জীবন মাঠ পর্যায়ে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করেছেন। কোনাে লাভের আশা করেননি, বড় পদও চাননি। অথচ ত্যাগের প্রতিদানে সেই আওয়ামী লীগের সেল্টারে থাকা সন্ত্রাসীদের হাতে তার দু ছেলে বলি হলাে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হত্যাকান্ড ঘটনার আগেও কয়েক দফা রাসেল ও আল আমিনের উপর হামলা করেছিল চিহ্নিত চক্রটি। সে ব্যাপারে থানায় মামলাও চলমান। পুলিশ তাদের আটক না করায় তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল। তারা জেলে থাকলে রাসেল খুন হতনা আর ভাই আল আমিন আজ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তনা। রাসেল আওমামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ছিল, তার ভাই আল আমিন সহজ সরল ছেলে। তারা মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ায় ওই চক্রটি ২০১৯ সালের ১২ জুন হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়িতে বােমা হামলা চালায় । গত বছরে আগস্ট মাসেও এক দফা হামলা করে।