আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৫৮

মণিরামপুরের কুলাঙ্গার সন্তানটি’ই কুড়িগ্রামের আর ডিসি।

স্টাফ রিপোর্টার।। বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামকে নির্যাতন করা আরডিসি নাজিম উদ্দিন এর আগে কক্সবাজারেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। কক্সবাজার সদরের এসিল্যান্ড থাকা কালে ২০১৮ সালে মে মাসে রোজাদার এক বৃদ্ধকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন। মাটিতে পড়ে থাকা বৃদ্ধের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গায়ের ওপর বসে কিল ঘুষিও মেরেছিলেন। এক পর্যায়ে অশ্রাব্য ভাষায় (যা প্রকাশযোগ্য নয়) গালাগাল করতে করতে কান ধরে টেনে-হিঁছড়ে তুলে কক্সবাজার সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়ে নিয়ে যান। এই ঘটনার ভিডিও সেই সময় প্রকাশ হলে নাজিম উদ্দিনকে কক্সবাজার থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল।

নির্যাতনের শিকার সেই বৃদ্ধ মোহাম্মদ আলী ওরফে নফু মাঝি সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময়টি পবিত্র রমজান মাস ছিল। আমি রোজা রেখেছিলাম। ঘটনার দিন হঠাৎ করেই আমার ভিটেতে কয়েকজন লোক গিয়ে জমি পরিমাপ করা শুরু করেন। এ সময় আমি তাদের পরিচয় জানতে চাই। আপনারা কারা জিজ্ঞেস করতেই এসিল্যান্ড নাজিম আমাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে পারাতে থাকেন। আমি মাটিতে শুয়ে থাকলে এসিল্যান্ড নাজিম উদ্দিন বলেন ‘আমাকে স্যার ডাকলিনা কেন?’। এসময় তিনি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করেতে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। আমি মাটিতে শোয়া অবস্থায় আমার বুকের উপর বসে মারধর করতে থাকেন। আমাকে আমার বাড়ি থেকে তুলে কান ও শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে গাড়িতে তুলে এসিল্যান্ড সদরের অফিসে নিয়ে যায়।

শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার-রাজস্ব) নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন লোকজন বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তার মাথায় কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। মারতে মারতে আরিফকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে চোখ-হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর তাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে এনকাউন্টার দিতে চান। এসময় আরডিসি নাজিম বারবার বলেন, তুই কলেমা পড়ে ফেল, তোকে এনকাউন্টার দেওয়া হবে।

কক্সবাজারের নাগরিক আন্দোলনের নেতা এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেছেন, এই নাজিম উদ্দিন দুই বছর আগে কক্সবাজার সদরের এসিল্যান্ড ছিলেন। দায়িত্বকালে বহু বিতর্কের জন্ম দেন তিনি। তাকে ‘স্যার’ না ডাকায় এক সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত করেন। এক বৃদ্ধকে কান টেনে শার্টের কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে ধরে নিয়ে যান। নিজ অফিসে দরজা বন্ধ করে খালি স্ট্যাম্পে দস্তখত নেন। মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করেন। আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে নাজিমের বিরুদ্ধে।

নাজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের সহ্য করতে পারেন না। তিনি কক্সবাজারে যেখানেই যান, সাংবাদিকের ওপর চড়াও হতেন। বলতেন, সাংবাদিক নাকি তার জাতশত্রু। নাজিম উদ্দিন কক্সবাজার থেকে বদলী হওয়ার পরও বহুজনের কাজ থেকে নামজারিসহ জমি সংশ্লিষ্ট কাজের নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন।

আরো সংবাদ