যশোর সদর উপজেলায় রূপদিয়া মধ্যপাড়ায় সন্ত্রাসীদের হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার ১৪টি বাড়ি-ঘর পরিদর্শন করেছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ। এসময় ক্ষতিগ্রস্তদের চাল ও নগদ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।
সোমবার দুপুরে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকনের নেতৃত্বে স্থানীয় নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলার শিকার নারীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ প্রায় দুই ঘন্টা ধরে তারা ১৪টি বাড়িঘরে নির্বিচারে ভাংচুর ও লুটপাট করে। তাদের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন মহিলাও রক্তাক্ত জখম হন। ঘরে থাকা ফ্রিজ, টিভি ভাংচুর করা হয়। কয়েক লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাও লুট করে তারা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত স্থানীয় প্রভাবশালী খবির খাঁ ও তার লোকজন এখনও তাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলছেন। না হলে তাদের বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। যে কোন সময় আবারও হামলার শিকার হতে পারেন বলে আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন তারা।
বিএনপি নেতা আঞ্জুরুল হক খোকন এসময় তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের নির্দেশে আমরা আপনাদের দেখতে এসেছি। বিএনপি আপনাদের পাশে আছে। আতঙ্কিত হবেন না। যারা এ হামলার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে যাতে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সে জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে’।
এসময় আঞ্জুরুল হক রানার সাথে সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, আশরাফুজ্জামান মিঠু, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদসহ বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে রূপদিয়ার মধ্যপাড়ায় নিম্নবিত্তদের ১৪টি বাড়ি-ঘরে সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল ৪০ থেকে ৫০ জন। এই হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালক মিলন হোসেন বাদী হয়ে রবিবারই যশোর কোতোয়ালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এজাহারে রূপদিয়ার খবির খাঁ, জাহিদ আলী, রমজান আলী, সাদ্দাম হোসেন, জুবায়ের হোসেন, আসলামসহ অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনকে এ হামলার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, আসামীরা শরিফুল ইসলামের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালিয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। তার স্ত্রী সালমা খাতুনের ঘর থেকে ৭০ হাজার টাকার স্বর্ণের দুল নিয়ে যায়। রাজিয়ার ঘর থেকে এক লাখ ৫ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণের গহনা, ইসমাইলের ঘর থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা, প্রিয়ার ঘর থেকে স্বর্ণের এক জোড়া কানের দুল, আনসারের ঘর থেকে নগদ ৭০ হাজার টাকা, মিলনের ঘর থেকে ৪০ হাজার টাকা লুট করে। এছাড়া সিদ্দিকের বাড়ির আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ ভাংচুর করে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি এবং নগদ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে হামলাকারীরা। হামলাকারীদের এলোপাতাড়ি মারপিটে আনসার, সুফিয়া, রাজিয়া, জানু, পারভীন ও সালমা বেগম জখম হন।