আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ১২:২৩

যশোরের সদরের রাজাপুরে হয়ে গেলো ঐতিহ্যবাহী ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা।

যশোরের সদর উপজেলায় রাজাপুরে হয়ে গেলো ঐতিহ্যবাহী ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা। এই প্রতিযোগিতা দেখতে এদিন ঢল নামে হাজারো মানুষের। সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামবাসী প্রায় দুই যুগ ধরে এ আয়োজন করে আসছেন। শনিবার রাজাপুর মাঠে দুপুর গড়াতেই এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে চলে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত। প্রতিযোগিতা দেখে আনন্দিত দর্শকেরা আয়োজকদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। আর আয়োজকরা বলছেন, যুব সমাজকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত রাখতে এবং বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করাতেই তাদের এ প্রয়াস।

ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপলক্ষে এদিন সকাল থেকেই আমন ধানের ফাঁকা বিস্তীর্ণ মাঠে বসে গ্রামীণ মেলা। যশোরসহ আশপাশের জেলা থেকে বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ প্রতিযোগিতা দেখতে ভিড় জমায়। ঘৌড়দৌড় উপলক্ষে দেড় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসে বিশাল মেলা। স্থানীয়ভাবে যা রাজাপুরের পৌষ মেলা হিসেবে পরিচিত। এবার অনুষ্ঠিত ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতায় যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহ থেকে আসা ১৯টি ঘোড়া অংশ নেয়।

প্রতিযোগিতার আয়োজক কমিটির সভাপতি ওয়াজেদ আলী জানান, প্রায় একযুগ ধরেই এ ঘৌড়দৌড় ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বাংলা বছরের পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহে এ ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলেও এবার করোনা আর আমন ধান কাটা দেরি হওয়ায় আয়োজন একটু দেরি হয়েছে। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় মেলাও। মেলায় মিষ্টি-মিঠাই, হাড়ি-পাতিল, খেলানা, কাঠের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানীরা। তবে মেলার মূল অর্কষণে ছিল চরকা, নাগরদোলা। যা প্রতিযোগিতার মাঝে এসব এলাকবাসীর বাড়তি বিনোদন দেয়। গোটা আয়োজনকে ঘিরে এলাকার সকল বয়সী মানুষ মেতে ওঠেন আনন্দ উৎসবে।

মফিজুর রহমান নামে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক জানান, খুলনা বিভাগের সব কয়েকটি জেলার প্রতিযোগীরা এতে অংশ নেয়। কিন্তু করোনায় এবার কিছুটা আয়োজনের ঘাটতি হয়েছে। দূরন্ত গতিতে ছুটে চলা ঘৌড়দৌড় দেখে সবশ্রেণির মানুষ খুশি হয়। এছাড়া প্রতিযোগিতার পাশাপাশি মেলায় বিভিন্ন ধরণের গ্রামীন খেলনা ও বাহারি খাবারের পসরা বসে।

প্রতিযোগিতায় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়ার জাহাঙ্গীরের ঘোড়া প্রথম, অভয়নগর উপজেলার পোড়াখালীর ওসমান চৌধুরী দ্বিতীয় ও একই উপজেলার জুখাড়ার হালিম মল্লিকের ঘোড়া তৃতীয় হয়। প্রতিযোগিতা শেষে ওয়াজেদ আলীর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইছালী ইউপি চেয়ারম্যান এসএম আফজাল হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ডেপুটি পরিচালক সিরাজুুল ইসলাম, ইছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাস্টার রবিউল ইসলাম, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মিজানুর রহমান। এ সময় ইছালী পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক তরিকুল ইসলাম, নেতা রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত