যশোর অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকার হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তিনজন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ করে দেয়ার কথা বলে ১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চাঁদার বাকি টাকা না দেয়ায় পার্টির নেতা কিরনের নেতৃত্বে উত্তমকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে ওই তিনজন। মঙ্গলবার এ তিনজনের জবানবন্দি গ্রহণ শেষে অতিরিক্তি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মারুফ আহমেদ বাকি দুইজনসহ ৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলো খুলনা ডুমুরিয়ার রুদাঘর গ্রামের ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল, অভয়নগরের সুন্দলী গ্রামের প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট, খুলনা দিঘলিয়া গ্রামের বিজন কুমার মন্ডল ওরফে বিনোদ, মণিরামপুরের সুজাতপুর গ্রামের পল্লব বিশ্বাস ওরফে সুদিপ্ত ও খুলনা ডুমুরিয়ার চুকনগর গ্রামের প্রশান্ত মন্ডল।
জবানবন্দিতে ওই তিনজন জানিয়েছে, তারা সকলে ‘নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট’ পার্টির সক্রিয় সদস্য। তাদের পার্টির প্রধান কিরণ ওরফে কিশোর ওরফে তপন ওরফে বাদল ওরফে মাহমুদ। তার নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় তারা চাঁদাবাজি করে থাকে। অভয়নগরের সুন্দলী গ্রামের প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট এ এলাকার দায়িত্বে ছিলো। বুলেট অভয়নগর এলাকার ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ ধনীদের মোবাইল নাম্বার জোগাড় করে কিরণকে দিত। কিরণ ফোন দিয়ে চাঁদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বুলেটকে জানিয়ে দিত। ইউপি নির্বাচনের আগে উত্তমের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করা হয়েছিল। উত্তম ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল। নির্বাচনের পর চাঁদার সম্পূর্ণ টাকা না দিয়ে ৩০ হাজার টাকা দেয়ায় পার্টির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকান্ডের সাথে তারা তিনজনসহ আরও কয়েকজন জড়িত বলে জানিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই শামীম হোসেন জানিয়েছেন, উত্তম হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অস্ত্রসহ ওই ৫ জনকে আটক করা হয়। আটকদের রিমান্ড শেষে গতকাল মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। এদের মধ্যে ইকরামুল, প্রজিৎ ও বিজন হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে স্কুল মাঠে খুন হন সুন্দলী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার উত্তম সরকার। এ ঘটনায় অভয়নগর থানায় মামলা হওয়ার পর গত শনিবার গভীর রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত যশোর ডিবি পুলিশের একটি দল খুলনার ডুমুরিয়ার, যশোরের অভয়নগর, মণিরামপুর ও কেশবপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ৫ জনকে আটক করে। একই সাথে হত্যার মিশনে ব্যবহৃত ১টি ওয়ান শুটারগান, ৩ রাউন্ড গুলি, ২ টি গুলির খোসা, ৬ রাউন্ড কার্তুজ, ১টি এয়ারগান, ১টি ককটেল, ২ টি মোটরসাইকেলসহ বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।