আজ - মঙ্গলবার, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - রাত ১:১৫

যশোরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু!

যশোরে আগুনে পুড়ে শিরিন আক্তার নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি যশোর সদর উপজেলার আরবপুর মাঠপাড়ার জুয়েল সরদারের স্ত্রী। তবে এই মৃত্যুকে ঘিরে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। নিহতের পিতার দাবি, শিরিনকে তাঁর স্বামী গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। কিন্তু নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দাবি, ওই গৃহবধূ স্বামীর উপস্থিতিতে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আর পুলিশের দাবি উভয় ঘটনা শুনেছে। তবে বিষয়টি প্রকৃত তদন্ত না করে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

যশোর কোতয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, প্রায় তিন বছর আগে ওই এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে জুয়েল সরদারের সাথে ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের খলিলুর রহমানের মেয়ে শিরিন আক্তারের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের সংসারে সাকিব (দেড় বছর) একটি সন্তান আছে। উভয়ের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। প্রায় সময় তাদের দাম্পত্য কলহ বাঁধে। এক পর্যায়ে গৃহবধূ শিরিন গ্যাসের চুলা থেকে নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সে সময় তাঁর স্বামী জুয়েল বাড়িতে ছিলেন। শিরিন ছোটাছুটি করতে থাকলে জুয়েল পানিয়ে দিয়ে শরীরের আগুন নিভিয়ে দেয়। এ সময় চিৎকার খবর শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে।

পরে শিরিনের দুই দেবর ও শাশুড়ি এগিয়ে এসে তাকে দ্রæত যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু হাসপাতাল থেকে তাকে খুলনায় রেফার্ড করা হলে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করেন। তাকে একটি গাড়িতে করে ঢাকায় নেয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে ফুলতলা এলাকায় পৌঁছালে তাঁর মৃত্যু হয়।

তিনি আরো জানান, গৃহবধূর মৃত্যু হলে জুয়েল ও তাঁর দুই ভাই এবং মা সরাসরি যশোর কোতয়ালি থানায় লাশ নিয়ে আসে। পরে পুলিশ লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। জুয়েলের মা আমেনা বেগম, ভাই রমজান ও সানা উল্লাহ গৃহবধূর পিতার বাড়ি কায়েমকোলায় যায়। ওই সময় পুলিশের কাছে সংবাদ আসে ঐ ৩ জনকে আটকে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ তাদের ওই বাড়ি থেকে নিয়ে আসে।

এদিকে গৃহবধূর মৃত্যু সম্পর্কে নিহতের পিতা খলিলুর রহমান জানন, তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। জুয়েলের সাথে বিয়ের পর থেকে তার মেয়ে শিরিনকে তার স্বামী জুয়েল নির্যাতন করতো। জুয়েলকে অনেক টাকা সোনার গহনা ও মালামাল দেয়া হয়। কিন্তু তারপরও নির্যাতন করা হয়। জুয়েল তার মেয়ের শরীরের পেট্রোল ঢেলে শরীরের আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে।

অপরদিকে, জুয়েলে মা আমেনা জানান, তিনি অন্য বাড়িতে থেকেন। শিরিন অনেক জেদি মেয়ে। শুনেছেন-গন্ডোগোলের পর শিরিন নিজের শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। ওই সময় জুয়েল পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে হাসতাপালে নিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে।

পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আনছারুল হক সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি আশেপাশের লোকজনের কাছে ঘটনা শুনেছেন। তাতে মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো সংবাদ