যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াকুব আলীর ভাই ওয়ালিউর রহমানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ এনেছেন মণিরামপুর উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত ৩০ মার্চ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে এমপির ভাই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের ওপর হামলা চালান। এখন অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, ‘গত ৩০ মার্চ দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় নকল করার সময় কক্ষ পরিদর্শকের কাছে ধরা পড়ে। এরপর ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা করে। এরপর থেকে সংসদ সদস্যের ভাই ওয়ালিউর রহমান ও তার একান্ত সহচর আবুল কালাম আজাদ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষকে উসকে দিয়ে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার আত্মহত্যার ঘটনায় একটি বিভাগীয় তদন্ত চলাকালে ওয়ালিউর রহমান ও আবুল কালাম আজাদের ইন্ধনে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা শিক্ষকদের মারধরসহ প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে স্থানীয় নেহালপুর ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ আসার আগেই সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, ‘এমপির ভাই ওয়ালিউর রহমানের আস্থাভাজন আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের জন্য চাপ দিয়ে আসছেন, এমপির ভাইকে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করতে চাচ্ছেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় তারা আমার ওপর ক্ষুব্ধ। এছাড়া খানপুর ইউনিয়নে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে আবুল কালাম আজাদ কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা চান। তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এরই সূত্র ধরে ওই শিক্ষার্থীর আত্মহত্যাকে ভিন্নখাতে নিতে নানা গল্প সাজিয়ে বিশৃঙ্খলা করছে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সংসদ সদস্য ইয়াকুব আলীর ভাই ওয়ালিউর রহমান। তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ যেসব অভিযোগ করেছেন, তা মোটেও সত্য নয়। রোজার ২০-২৫ দিন আগে অধ্যক্ষ রেজাউল করিম যশোরে আমার অফিসে এসে অভিযোগ করেন আবুল কালাম আজাদ মিলন তার কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। বিষয়টি মিলনের কাছে আমি জিজ্ঞাসা করেছি। সে একেবারেই অস্বীকার করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানে সভাপতি হওয়ার জন্য আমি এসব কাজ করছি বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার এক শতাংশও সত্য নয়।