আজ - শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - রাত ৪:০৮

যশোরে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে করোনা, শনাক্তের হার ৪২.৮০ শতাংশ

যশোরে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে বেশ আগেই। এরই মধ্যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ওমিক্রন। এরই মধ্যে বুধবার তৃতীয় ঢেউয়ে প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। প্রথম দিনেই করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন তিনজন। পরদিন বৃহস্পতিবারও একজনের মুত্যু হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রথমদিন (বুধবার) চিকিৎসাধীন তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজন করোনা আক্রান্ত ও দুইজন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিলেন। করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তি হলেন, যশোর সদর উপজেলার নারঙ্গালী গ্রামের কুদরত উল্লাহ (৫১)। আর যশোর জেনারেল হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ঝিনাইদহের সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের তরিকুল ইসলাম ও আরেকজন আব্দুর রহিম। আর বৃহস্পতিবার করোনা সন্দেহে আতিয়ার রহমান (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুয়ায়ী, যশোরে ক্রমেই করোনা সংক্রমণের হার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বৃহস্পতিবারের ফলাফলে যবিপ্রবির ল্যাবে যশোরের ১১৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪২.৮০ শতাংশ। এর আগে বুধবার জেলায় ২২৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শতকরা হার ছিলো ৪৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। চলতি মাসের শুরুতে জেলায় করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। শনাক্তের হার ৪০ শতাংশের উপরে ছিলো। গত সোমবার যা ৫০ শতাংশ পেরিয়ে যায়। শুধু সদর উপজেলাতেই প্রতিদিন দেড়শোর বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। সংখ্যার হিসেবে এরপর আছে ঝিকরগাছা ও শার্শা। তবে সংক্রমণ কম আছে বাঘারপাড়া কেশবপুর ও অভয়নগর উপজেলায়।

সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, বৃহস্পতিবারের প্রাপ্ত ফলাফলে যবিপ্রবির ল্যাবে জেলায় ২৭১ জনের নমুনার বিপরীতে ১১৬ জন শনাক্ত হয়েছে। যার শতকরা হার ৪২ দশমিক ৮০ শতাংশ।

যশোরে করোনার ভয়বহতা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহকারী পরিচালক অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, যশোরে করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের শরীরে ওমিক্রন পাওয়া গেছে। যা ইতিমধ্যেই স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ শুরু করেছে। আর এ ধরনটি এখনো পর্যন্ত পাওয়া সকল ধরনের থেকে বেশি সংক্রমিত করে মানুষকে। যা কয়েক গুণ পর্যন্ত বেশি।

তিনি আরো বলেন, এটির উপসর্গ খুবই সাধারণ ও হালকা হওয়ায় মানুষ একে খুব একটা আমলে নিচ্ছে না। এতে সংক্রমণ কয়েক গুণ বেশি ছড়াচ্ছে। করোনার ওমিক্রন ধরনটি তুলনামূলক উপসর্গহীন হলেও, এটি মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে কার্যত দুর্বল ও স্থায়ী কিংবা ক্ষণস্থায়ী ক্ষতিগ্রস্থ করে। সুতরাং এখনই মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি না হলে, যশোরবাসীর জন্য সামনে ভয়াবহ পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।

যশোর সদর হাসপাতালের উপ সেবা-তত্ত্বাবধায়ক ফেরদৌসী বেগম জানিয়েছেন, জেনারেল হাসপাতালের রেড জোনে চারজন, ইয়েলো জোনে ১০ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরো সংবাদ