আজ - শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:৫১

যশোর রেলস্টেশনে শেড না থাকায় বছরের পর বছর খোলা আকাশের নিচে খালাস হচ্ছে পণ্য

যশোর রেলস্টেশনে নিরাপওার অভাবে মারাত্মক ঝুঁকিতে আছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। রেলের কোনো শেড বা ইয়ার্ড না থাকায় গত দেড় বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে খালাস হচ্ছে এসব পণ্য। ফলে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে-পুড়ে নষ্ট হচ্ছে পণ্যের গুণগত মান। করোনা মহামারি শুরুর পর গত বছরের ২৩ এপ্রিল থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে মালবাহী ট্রেনে শুরু হয় পণ্য আমদানি। বেনাপোল রেলস্টেশনে কোনো ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড বা পণ্য খালাসের জায়গা নেই। সেজন্য রাজস্ব পরিশোধের পর বন্দর ও কাস্টমসের ছাড়পত্র নিয়ে আনলোডের জন্য পণ্যবাহী ট্রেন চলে যাচ্ছে যশোর রেলস্টেশন এলাকায়। রেল সূত্র জানায়, যশোর রেলস্টেশন এলাকায় প্রতিমাসে আমদানি করা ৫০ থেকে ৬০টি র‌্যাক খালাস হয়ে থাকে। প্রতি র‌্যাকে কমপক্ষে ৪০টি থেকে সর্বোচ্চ ৬০টি কন্টেইনার থাকে। প্রতি র‌্যাকে পণ্য থাকে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার। বাংলাদেশ-ভারত চেম্বারের সভাপতি মতিয়ার রহমান জানান, ভারত থেকে রেলযোগে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে ধান বীজ, ভুট্টা বীজ, সারাও  সোডাসহ কারখানার বিভিন্ন কাঁচামাল খালাস করা হয় যশোরে। ট্রেন থেকে এসব পণ্য আনলোড করতে প্রতিদিন কাজ করেন শতাধিক শ্রমিক। কোনো ইয়ার্ড বা শেড না থাকায় পণ্যগুলো ঝুঁকি নিয়েই খালাস করা হয়। রেলের কন্টেইনার থেকে ট্রাকে আনলোড করা এসব পণ্য চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, রেলযোগে আমদানি করা ৫২০ মেট্রিক টন সোডা তার প্রতিষ্ঠান ছাড় করিয়েছে। কন্টেইনার থেকে আনলোড করে ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বগুড়ায়। ‘আনলোড পয়েন্টে ট্রাক ঢোকার জায়গা কম। কাঁচা রাস্তা ইতোমধ্যে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পণ্যবোঝাই ট্রাক আসা-যাওয়ার সময় রাস্তা দেবে যাচ্ছে। নেই কোনো ইয়ার্ড, খোলা আকাশের নিচে ভয়ে ভয়েই পণ্যগুলো খালাস করতে হয়’, বলেন তিনি। যশোর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (কার্য) চাঁদ আহম্মেদ বলেন, ‘যশোর রেলস্টেশনে রেলওয়ের ইয়ার্ড তৈরির জন্য সোয়া কোটি টাকার কাজ শুরু হয়েছে। পণ্য আনলোড করার জন্য প্লাটফর্ম তৈরিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা আছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিরাজমান সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।’ বেনাপোল রেলস্টেশন মাস্টার সাঈদুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিকের মজুরি কম, সময় অল্প লাগে। পণ্যগুলো ট্রাকে দেশের অন্যান্য স্থানে সহজে নিয়ে যাওয়া যায় বলে পণ্য খালাসের স্থান হিসেবে যশোরের চাহিদা বেশি।’ গত ১ বছরে সরকার প্রায় দেড়শ কোটি টাকা আয় করেছে। যশোরে পণ্য আনলোড করার কারণে ব্যবসায়ীদের টাকা ও সময়ের সাশ্রয় হচ্ছে। ফলে এখানে মানসম্পন্ন রেলওয়ে ইয়ার্ড নির্মাণ করা গেলে ট্রেনের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। কম সময়ে দ্রুত পণ্য খালাস করা সম্ভব বলে ব্যবসায়ীরা রেলযোগে পণ্য আমদানিতে উৎসাহিত হচ্ছেন।উল্লেখ্য, বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করা পণ্য থেকে সরকার বছরে ৬ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে। অবিলম্বে যশোর রেলস্টেশনে ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত