কক্সবাজারের রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিনে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন যেন কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না। ইতিপূর্বে রামুতে ড্রেজারে বালি উত্তোলনের ব্যাপারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা খুনিয়াপালং ইউনিয়নে অভিযানে গিয়ে দুই জনকে জরিমানা সহ অপরাপর ড্রেজার মালিকদের সতর্ক করেন। এদিকে প্রশাসনের অভিযানের পর থেকেই রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নে পূর্বের চেয়ে আরো দ্বিগুণ উদ্যমে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে চলেছে বালুু দস্যুরা। প্রশাসনের নির্দেশনাকে যেন তোয়াক্কাই করছে না তারা। প্রায় ৪/৫ টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিনে রাতে বিরামহীনভাবে বালি উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। প্রশাসনের অভিযানের পরও অবৈধ ড্রেজারে বালি তোলা বন্ধ না হওয়ায় এলাকার সচেতন মহলের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, বালুখেকোরা প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেও, প্রশাসনের তেমন কোন জোরালো ভূমিকা চোখে পড়ছেনা। এটা কি প্রশাসনের সক্ষমতার অভাব নাকি বোঝাপড়া! যেটা অনেকের প্রশ্ন
ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী বা ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে খুনিয়াপালং ইউনিয়নের নদী বা ছড়ার তীরবর্তী গ্রামগুলো। ভাঙ্গছে নদীর পাড়, প্রতিদিন ২০/৩০ গাড়ি যোগে বালি সরবরাহের কারনে ইট পাথর উঠে গিয়ে গ্রামীন সড়কগুলো যাতায়তে অযোগ্য হয়ে পড়ছে। এদিকে ড্রেজারে উত্তোলনকৃত বালি সড়কের গা ঘেঁষে মজুদ করায় স্থানীয় জনসাধারনের যাতায়তের পাশাপাশি যান চলাচলেও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। যার ফলে যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের সড়ক দূর্ঘটনার বলি হয়ে প্রানহানির শংকায় রয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের কর্তারা দুএকজনের ড্রেজার মেশিনকে টার্গেট করে অভিযান করেন। যা অনেকটা কারো দেওয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নের মত। প্রশাসনের লোক দেখানো অভিযান, কিন্তু অন্তরালে ভিন্ন কিছু। এনিয়ে এলাকার মানুষের মাঝে নানান প্রশ্নের জানান দিচ্ছে।
স্থানীয় নাছির উদ্দীনসহ অনেকে জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদী বা ছড়ার তীর ভেঙে যাচ্ছে, কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না, আমরা অসহায় মানুষ, আমাদের কথা কেউ কর্ণপাত করে না। তবে যত দ্রুত সম্ভব বালু উত্তোলন বন্ধ না করলে বন্যা মৌসুমে তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম নদী বা ছড়ার গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে বলে আতংকে রয়েছেন ভুক্তভোগী মানুষগুলো।
ড্রেজার মেশিনের কারনে রামু উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন উল্লেখ করে এক পরিবেশবাদী জানান, প্রশাসনের দায়সারা অভিযান কোনভাবে নিষিদ্ধ ড্রেজার বন্ধ করা সম্ভব নয়। প্রশাসন আন্তরিক হলে এ সমস্ত অসঙ্গতি পুরোপুরিভাবে দুর করা কোন ব্যাপার না। কিন্তু দেখা যায় হাতে গোনা দু একজন শাস্তির আওতায় আসলেও বাকিদেরকে অদৃশ্য কারনে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। জেল-জরিমানা করে গনহারে শাস্তির আওতায় আনা গেলে এসমস্ত নিষিদ্ধ ড্রেজার সমূলে উৎখাত সম্ভব। খুনিয়াপালং ইউনিয়নের থোয়াইংগা কাটা এলাকার সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজ, হত্যা মাদক ও বন মামলার আসামি মৃত শফির ছেলে দিদারুল আলম জিসান, আনুয়ারের বালুসহ গাড়ী সম্প্রীতি প্রশাসন জব্দ করলেও তা তোয়াক্কা করছে না, পূনরায় থোয়াইংগা এলাকায় ফজ্বল আম্বিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তলন করতেছে,পশ্চিম ও পূর্ব গোয়ালিয়া এলাকায় বালু উত্তলন করা হচ্ছে।
প্রশাসন কে অবহিত করলেও দৃশ্যমান কোন অভিযান পরিচালনা হচ্ছে না। তাই বালু কেকোরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে, এতে সরকার হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব। বালু দস্যুদের চিহ্নিত করে সমানুপাতিকভাবে শাস্তি প্রদান করতে হবে। শুধু জরিমানায় সিমাবদ্ধ থেকে ড্রেজার বন্ধ করা যাবে না। অভিযান পরিচালনাকালে ড্রেজার মেশিন ধ্বংশ-জব্দ, উত্তোলনকৃত বালি জব্দসহ জেল জরিমানার বিধান চালু করা হলে এ সকল পরিবেশ বিধ্বংশী নিষিদ্ধ ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা চিরতরে বন্ধ হয়ে যেত বলে অভিমত প্রকাশ করেন রামুর সচেতন মহল।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ফাহমিদা মুস্তফা জানান, অবৈধ বালির মহাল ও ড্রেজার মিশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন কারী বালি কেকোদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্তা নেওয়া হবে।