আজ - সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৩২

রাম রহিম এক ‘বুনো পশু’, বললেন বিচারক

আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক॥ ভারতের ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং কোনও করুণা পাওয়ার যোগ্য নন, তিনি দুই শিষ্যের পবিত্রতা নষ্ট করে ‘বুনো পশুর’ মত আচরণ করেছেন। রাম রহিমের সাজা ঘোষণার সময় এমন কথাই বলেছেন বিচারক।

রায় ঘোষণার সময় বিচারক জগদীপ সিং বলেন, “দোষীসাব্যস্ত ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাপ্য। কারণ, তিনি নিজেকে একজন অবতার হিসেবে মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন এবং নিজের অবস্থান ও ক্ষমতার অযৌক্তিক সুবিধা নিয়েছেন।”

“ধর্ষণের শিকার ব্যক্তিরা তাকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়েছিলেন এবং তাকে পূজা করেছিলেন। অথচ অভিযুক্ত তার এমন সরল ও অন্ধ অনুসারীদের যৌননিপীড়ন করে প্রকৃতির গুরুতর লঙ্ঘন করেছেন।”

১৯৯৯ থেকে ২০০২ সালের মধ্যে দুই নারী শিষ্যকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষীসাব্যস্ত করে ভারতের একটি আদালত সোমবার রাম রহিমকে ১০ বছর করে মোট ২০ বছরের কারাদন্ড দেয়। সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার দুই নারীকে দিতে হবে ১৫ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ।

বিবিসি জানায়, এ মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) আসামি রাম রহিমের যাবজ্জীবন কারাদন্ড চেয়েছিল।

২০০৭ সালে শুনানি শুরুর পর দশ বছরের মাথায় মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। চন্ডিগড়ের পাঁচকুলায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত গত শুক্রবার ওই মামলায় রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করলে পাঞ্জাব ও হরিয়ানায় ব্যাপক তান্ডব শুরু করে এই ধর্মগুরুর ভক্তরা। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী দিল্লি পর্যন্ত; সহিংসতায় ৩৮ জন নিহত হয়।

যার প্রেক্ষাপটে সোমবার সাজা ঘোষণার দিন ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এদিন আদালতে রায় না দিয়ে রাম রহিম যেখানে আছেন, সেই রোহতক কারাগারে অস্থায়ী এজলাস বসিয়ে সাজা ঘোষণা করা হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে দুই অভিযোগকারীনিই উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

রাম রহিমের আইনজীবীরা শুনানিতে এই ধর্মগুরুর শারীরিক অবস্থা, তার সমাজসেবামূলক কাজ এবং ‘আইনের প্রতি তার শ্রদ্ধার’ প্রসঙ্গ টেনে বিচারককে সেগুলো মাথায় রেখে রায় দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন।

এর কড়া জবাবে রায়ের শেষ দিকে বিচারক বলেন, “যখন অভিযুক্ত এমনকি তার নিজের ভক্ত-অনুসারীদের পর্যন্ত ছাড় দেয়নি এবং তাদের সঙ্গে বন্য পশুর মত ব্যবহার করেছে; সে কোনও ধরনের করুণা পাওয়ার যোগ্য না।”

বাদীপক্ষের একজন আইনজীবী জানান, আরও ‘৪০ থেকে ৫০ জন নারী ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন’ এবং তারা এ মামলায় আরও বিস্তারিত তদন্তের আবেদন করবেন।

ধর্ষণের মামলা ছাড়াও রাম রহিমের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যা মামলা আছে। আগামী মাসে যেগুলোর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

আরো সংবাদ