আজ - বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সন্ধ্যা ৭:২১

রিফাত হত্যায় মিন্নি জড়িত, জবানবন্দিতে প্রধান আসামি ফরাজী

বরগুনায় রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে কুপিয়ে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে তার স্ত্রী ও মামলার প্রধান আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি জড়িত। আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে এ তথ্য দিয়েছে এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম নায়ক রিফাত ফরাজী। মামলার এজাহারে তার নাম দুই নম্বরে থাকলেও প্রধান আসামি নয়ন বন্ড কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় রিফাত ফরাজীই এ মামলার প্রধান আসামি।

তৃতীয় দফায় সাত দিনের রিমান্ডের ছয় দিন শেষে শনিবার আদালতে হাজির করা হয় রিফাত ফরাজীকে। এদিন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ফরাজী জানান, হত্যার সঙ্গে রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিও জড়িত। তিনি হত্যা পরিকল্পনায়ও অংশ নিয়েছেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করে রিফাত হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বরগুনা সদর থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন করিব বলেন, রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রিফাত ফরাজী। স্বীকারোক্তিতে রিফাত ফরাজী এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত বলেও বিচারককে জানিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী রিফাত ফরাজীকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। ওই ঘটনার দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজী তাকে রামদা দিয়ে কোপাচ্ছে। ঘটনার দিন থেকেই নিখোঁজ হয় এ দুই যুবক। এর ছয় দিন পর ২ জুলাই নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। ওই দিন রাতেই রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

গ্রেফতার হওয়া রিফাত ফরাজী বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীও এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে রিমান্ডে আছে। শনিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রিফাত ফরাজীকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর কক্ষে নেয়া হয়। জবানবন্দি দেয়া শেষে রাত পৌনে ৮টায় তাকে জেলহাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রসঙ্গত বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

এ হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়। এ মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

আরো সংবাদ