করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। বিশ্বব্যাপী প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। বর্তমানে এই ভাইরাসে বিভিন্ন দেশের মধ্যে টালমাটাল ভারত। গেল কয়েকদিন ধরেই দেশটিতে প্রতিদিন সংক্রমণের রেকর্ড একের পর এক ভেঙ্গে যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দেশটিতে প্রথমবারের মতো দৈনিক সংক্রমণ ২ লাখ পেরিয়েছিল। এরপর থেকে রোজই সংক্রমণ হচ্ছে ২ লাগের বেশি মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫৯ হাজার মানুষ। এছাড়াও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ১৭৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা থেকে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশটির বিপর্যস্ত অবস্থার চিত্র সম্পর্কে ধারণা করা যায়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দেড় কোটিরও বেশি মানুষ।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। এ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো ভারতে দৈনিক দুই লাখের বেশি সংক্রমণ শনাক্ত হলো। করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে বিশ্বে ভারতের অবস্থান এখন দ্বিতীয়।
সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আগামী ১ মে থেকে ১৮ বছর হলেই টিকা নেয়া যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে মোট উৎপাদনের ৫০ শতাংশ পূর্বনির্ধারিত মূল্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে এবং বাকি অংশ রাজ্য সরকার ও বাজারে বিক্রির জন্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
এদিন মহারাষ্ট্রে ৫৮ হাজার ৯২৪ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ৩৫১ জন। রাজ্যটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ লাখ ৯৮ হাজারে এবং মোট মারা গেছেন ৬০ হাজার ৮২৪ জন। মোট আক্রান্ত বিবেচনায় মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে যথাক্রমে কেরালা, কর্ণাটক, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্র প্রদেশ।
আশঙ্কাজনক সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে দিল্লিতে চলছে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন। এরই মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ২৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ৬৮৬ জনের শরীরে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত থেকে কেরালায় রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কেরালায় ১৩ হাজার ৬৪৪ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে কর্ণাটকের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের। বৈঠকের পর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিশেষ করে প্রাদেশিক রাজধানী বেঙ্গালুরুতে কঠোরতম পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যটিতে ১৫ হজার ৭৮৫ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
সোমবার আসামে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ১ হাজার ৩৬৭ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত হয় এবং মৃত্যু হয় ৭ জনের।