চলমান কঠোর লকডাউন শিথিল করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সব কিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি নিম্নবিত্ত মানুষ। দরিদ্র এসব মানুষের ভাষ্য, করোনা মহামারী জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, কিন্তু দুই বেলা, দুমুঠো খাবারও আমাদের জন্য জরুরি। এখন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করে খেতে চান তারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকার নিম্নবিত্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে কঠোর লকডাউন শিথিলে তাদের স্বস্তির কথা জানা যায়।
শনিরআখড়া আরএস মার্কেটের একটি দোকানের কর্মচারী আবদুল বাতেন। করোনা মহামারীর দ্বিতীয় ধাক্কায় চলমান লকডাউনে মার্কেট বন্ধ রয়েছে। আবদুল বাতেন বলেন, দোকান বন্ধ থাকলে আমাদের বেতন দিতে পারেন না মালিক। অল্প কয়টা টাকা বেতন পাই সেটাও যদি না পাই তাহলে আমরা খাবো কি? মেস ভাড়া দেবো কোথা থেকে। তিনি বলেন, করোনা মহামারী জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু নিজে এবং পরিবারের জন্য দুই বেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করাও আমাদের জন্য জরুরি।
বাতেন আরও বলেন, আমাদের বিপদ দুদিকে। একদিকে করোনাভাইরাস আমাদের জীবন কেড়ে নিতে ছুটে আসছে। অন্যদিকে লকডাউন দিলে ক্ষুধা-অভাব আমাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। কঠোর লকডাউন শিথিল করে সীমিত পরিসরে সব কিছু খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ দেন তিনি।
শনিরআখড়ার আরেক বাসিন্দা বেলাল হোসেন। তিনি দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন। বেলাল বলেন, যাদের জমানো টাকা আছে অথবা বেশি টাকা আয় করেন লকডাউন তাদের জন্য সমস্যার কিছু না। কিন্তু যারা দিনমজুর, আমরা দুদিন বেকার বসে থাকলে তৃতীয় দিন আমাদের ঘরে খাবার থাকে না। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের কাজ করার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, আমরা খুশি।
মাতুয়াইল কাজীরগাঁও এলাকার বাসিন্দা মোটর শ্রমিক তারেক হাসান বলেন, দিনের পর দিন ঘরে বেকার বসে থাকলে আমরা ক্ষুধায় মারা যাবো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু চালু থাকলে আমরা কিছুটা ভালো থাকবো। লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্তে নিজে খুশি বলে জানান তিনি।
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মানা হয় না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকে মানে, অনেকে মানেন না। যারা মানবে না তাদের কঠোর শাস্তি দিলে সবাই যথাযথ ভাবে মেনে চলতে বাধ্য হবে।