আজ - বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সন্ধ্যা ৬:৫৪

লাইজু চাই সিলেকশন, নীরা ও তৃন্যমূল চাই ইলেকশন।

নিজেস্ব প্রতিবেদক : অপেক্ষার প্রহর শেষ। অবশেষে শুভক্ষণ। ভোর হতে শুধু রাতটুকুই বাকি।  দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ অপেক্ষার পর ১২ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যশোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন নেতৃবৃন্দও ।

শনিবারের এই সম্মেলন ঘিরে মহিলা আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মাঝে  যেমন উৎসব আমেজ বিরাজ করছে তেমনি প্রার্থীদের মধ্যে থেকে তৃণমূলের ভোটাভুটিতে মহিলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব গ্রহণ করুক এমনটিই প্রত্যাশা অধিকাংশ নেতাকর্মীর।

ঐদিন সকাল ১০ টায় যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সাফিয়া খাতুন। প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য।

১৯৯৭ সালের ২৭ অক্টোবর সম্মেলনের মাধ্যমে যশোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগে কমিটি গঠন করা হয়। ৭১ সদস্যের এই কমিটি দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে। এখন এই সম্মেলনকে ঘিরে মহিলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সম্মেলনে সভাপতি পদের জন্য প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন, বর্তমান সভাপতি ও সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নূরজাহান ইসলাম নীরা, প্রচার সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাইজু জামান সহ আরও অনেকে।

আগামীকালকের এই সম্মেলনকে সামনে রেখে যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার সহ দুজন সভাপতি পদপ্রার্থী নূরজাহান ইসলাম নীরা এবং লাইজু জামানের মন্তব্য তুলে ধরেছেন খান জাহান আলী 24/7 নিউজ।

শহিদুল ইসলাম মিলন (সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যশোর জেলা শাখা)

“ দল শক্তিশালী হয় নিয়মিত সম্মেলন হলে এখানে যারা সঠিকভাবে কাজ করেনি বা করেনা তারা বাদ পড়বে আমরা আশা করবো যারা দীর্ঘদিন ছাত্রী নেতৃত্বে ছিলেন এবং গত দিনে যারা দলে সময় দিয়েছেন, অন্দোলনে রাজপথে ছিলেন এবং সততার সাথে জীবনযাপন করেন তারাই আগামী সম্মেলনে দায়িত্ব পাবেন।” সম্মেলন কোন প্রক্রিয়াতে হবে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, “কেন্দ্র যেটা সিদ্ধান্ত দেবেন আমরাও সেটা মেনে নেবো তবে আমরা চাইবো দ্বন্দ বাদ দিয়ে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সবকিছু সিদ্ধান্ত হবে।”  

শাহিন চাকলাদার (সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যশোর জেলা শাখা ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান)

“ কেন্দ্রীয় কমিটির আলোচনায় ১২ তারিখে সম্মেলন হবে ।কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে সমযোথার আলোচনা হবে। সমযোথা না হলে তার অতীত বিবেচনা করার পর যদি নেতৃ নির্বাচন সম্ভব না হয় তবে তৃণ্যমূলের মতামতের ভিত্তিতেই এ সম্মেলন হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ধরণের দুর্ণীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন।মহিলা আওয়ামীলীগের এই কমিটি গঠনে যদি কোন প্রকার দুর্ণীতি হয় তাহলে এটা নেতৃী নিশ্চয়ই জেনে যাবেন।যারা জয় বাংলার কথা বলে, আদর্শের পিতা শেখ মুজিবের আদর্শ মানে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা শোনে আমি তাকেই সমর্থন করি।তুণ্যমূলের পছন্দই আমার পছন্দ।”

নূরজাহান ইসলাম নিরা ( জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি )

“ আমরা দীর্ঘ ২৪ বছর পরে সুন্দর একটি কাউন্সিল পেয়েছি। তৃণমূলের একটায় কথা দীর্ঘ ০২ যুগ পরের এই কাউন্সিলে আমরা ভোটের মাধ্যমে আমাদের যোগ্য প্রার্থী বেছে নেবো।গত ২৪ বছরে আমি তৃণ্যমূলকে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত করেছি।আজকের যশোরের নারী নেতৃত্বে অনেককেই আমার হাত ধরে মহিলা আওয়ামীলীগে এসেছে তার জন্য আমি গর্বিত এবং খুশি।আমি চাই আমার সংগঠন আরও মজবুত হোক।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছেন তাদের সাফল্যের মূল্যায়ন করে তাদেরকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চান সেই বিষয়টা নিয়েই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে চাই ও দেশের মহিলাদের ভাগ্য উন্নয়নের যে ধারা বইছে সেই উন্নয়ন যাতে আমরা করতে পারি আমরা সে কাজটা করবো।একটা গনতান্ত্রিক দেশে অনেকেই নেতেৃত্বে আসতে চাইবে কিন্তু আমাদের তৃণ্যমূলের ভোটার এবং কাউন্সিলর ভোটের মাধ্যমে যাকে বেছে নেবে আমি সেটাই মেনে নেবো।আমি বিগত দিনে ছাত্রলীগ করেছি তারপর মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সভাপতি থেকেছি। আমি চাই আমার তিলে তিলে গড়ে তোলা এই সংগঠনটিতে আর একটিবার দায়িত্বে এসে সুন্দর রুপ দিয়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে ।”

লাইজু জামান( জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য )

“ ২৪ বছর পরে এই সম্মেলনকে ঘীরে আমাদের মহিলা আওয়ামীলীগের যত নেতৃবৃন্দ এবং কর্মী রয়েছেন সকলের মাঝে আনন্দের ঢেও বইছে।আমি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে বাস্তব পরিস্থিত তুলে ধরে নেতৃত্ব মনোনয়নের দাবি রাখবো। তিনি বলেন, জেলা মহিলালীগের ২ যুগ আগে গঠিত এ কমিটির অনেক নেতৃত্ব সক্রিয় নেই।সম্মেলনে কাউন্সিলের মাধ্যমে তৃণমূলের ভোট হলে ভোট দেবেন কারা? সম্রতি এক বর্ধিত সভায় গুরুত্বপূর্ণ পদের অনেক নেতাই অনুপস্থিত ছিলেন। এটায় প্রমান করে ১২ অক্টোবরের সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করা অনেকটা কঠিন। তবে আমি কেন্দ্রীয় কমিটি বরাবর বাস্তব প্রেক্ষাপটটা তুলে ধরবো তারা যেমনটা সিদ্ধান্ত নেবেন আমি সেটায় মেনে নেবো।সম্মেলনে সভাপতির পদ পেলে আমি ত্যাগী ও রাজপথে ঘাম ঝরিয়েছেন এমন মহিলাদেরকে প্রাধাণ্য দেবো যাতেকরে তারা যোগ্য যায়গায় এসে দলকে আরও গতিশীল করে এবং যারা সাংগঠনিক মেয়ে সেই মেয়েগুলোকে মূল্যায়ন করবো।ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে গিয়ে কমিটি করে তৃণ্যমূলে মহিলা আওয়ামীলীগের কার্যক্রমে গতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবো।আমাদের অর্ধেক জনগোষ্ঠি নারী। নারীদেরকে দেশের জন্য কাজ করার জন্য আমরা সক্রিয় করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছেন এবং সেগুলি বাস্তবায়ন হচ্ছে। যে সকল নারীরা দেশের জন্য কাজ করতে চাই ঐ সকল নারীদেরকে খুজে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে সক্রিয় করবো।মহিলা আওয়ামীলীগ যশোর জেলা শাখার নেতৃত্বে আসলে এই সংগঠনের প্রতিটি কর্মীকে যথাযথ মূল্যায়ন করেই এগিয়ে যেতে চাই।” 

            

             

আরো সংবাদ