আজ - রবিবার, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি, (গ্রীষ্মকাল), সময় - রাত ৮:৪৩

শব্দ ব্যবহারে জটিলতা পরিহারের পরামর্শ

বিদেশি শব্দের জটিল বাংলা পরিভাষার বদলে সহজ, বহুল প্রচলিত ও পরিচিত শব্দের ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন তিনি।

গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যে তিনি বলেন, বিজ্ঞান গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যেন মানুষের কাজে ব্যবহার হয়, এটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক শব্দগুলো দুর্বোধ্য না করে ফেলা ভালো। বহুল পরিচিত ও প্রচলিত শব্দগুলো আমাদের ভাষায় ব্যবহার করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কনটেন্ট-এর বাংলা আধেয়। সবাই কনটেন্টই বেশি ব্যবহার করে এবং চেনে। আধেয় জানে না। আমি মনে করি, যে শব্দগুলো বহুল প্রচলিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, সেগুলো যে ভাষায় আসুক, সে ভাষায় আমাদের ব্যবহার করা উচিত। ওটারও পরিভাষা ব্যবহার করতে গিয়ে কোনো কিছুই বুঝব না, এটা যেন না হয়।

তিনি বলেন, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান পড়ার কোনো আগ্রহই ছিল না। তখন আমরা ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নিই। আর এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম দেওয়া হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আমার উদ্দেশ্য ছিল যে এই নামটা দিলে আমাদের ছেলেমেয়েরা বিজ্ঞান পড়ার দিকে আগ্রহী হবে, প্রযুক্তি শিক্ষার দিকে আগ্রহী হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করেছি, কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি। ছেলেমেয়েরা যাতে জাতীয় শিক্ষা পায় তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শিক্ষকদের কনটেন্ট তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণও দিয়েছি। তারা যাতে নিজেরাই তৈরি করতে পারেন, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের শহীদ দিবস নয়, সমগ্র বিশ্বের মাতৃভাষা-ভাষীদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিবস। পৃথিবীর অনেক দেশ দিবসটি পালন করে। এটা বাঙালি জাতি হিসেবে অত্যন্ত গর্বের। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারয়ের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী কোনো সরকারই ভাষার উৎকর্ষ বাড়াতে কাজ করেনি। আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট করেছি। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় ভাষা সংরক্ষণ ও মর্যাদা রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছি। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করেছি।

তিনি বলেন, সবাই এখন মোবাইলে এসএমএসসহ নানা সেবায় বাংলা লিখতে পারে। নৃগোষ্ঠীদের ভাষা ও বর্ণমালাকে বিলুপ্তি থেকে রক্ষার জন্য ২০১৭ সাল থেকে তাদের ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রবর্তন করেছি। এ বছর তাদের প্রায় ৩৩ হাজার বই দিয়েছি। ২০২১ সালে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক প্রবর্তন করেছি। প্রতি দু-বছর পর পর এ পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভাষা গবেষকদের ফেলোশিপ ও বৃত্তি দিচ্ছি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স বিভাগের অধ্যাপক লাফিফা জামাল। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীকসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো সংবাদ
যশোর জেলা
ফেসবুক পেজ
সর্বাধিক পঠিত