আজ - বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৮:৫০

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নতুন টার্মিনালের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এসময় তিনি ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ নামে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দুটি নতুন ড্রিমলাইনারও (বোয়িং ৭৮৭-৯) উদ্বোধন করেন। সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বিমানের একটি নতুন মোবাইল অ্যাপেরও উদ্বোধন করেন।

শাহজালালে নতুন টার্মিনাল স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে ২১ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এরমধ্যে সরকারি কোষাগার থেকে পাওয়া যাবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। বাকি অর্থ জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) থেকে পাওয়া যাবে। টামির্নাল নির্মিত হওয়ার পর শাহজালাল হবে এই অঞ্চলের মধ্যে সর্বাধুনিক বিমানন্দর। এটি নির্মিত হলে বছরে আরও অতিরিক্ত এক কোটি ২০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন।

নতুন আন্তর্জাতিক যাত্রী টার্মিনালটি হবে ২২ দশমিক ৫ লাখ বর্গফুটের। বর্তমানে দুটি টার্মিনালে ১০ লাখ বর্গফুট স্পেস রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিমানবন্দরের বর্তমান যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে বেড়ে দুই কোটি হবে এবং কার্গোর ধারণ ক্ষমতা বর্তমান দুই লাখ টন থেকে বেড়ে পাঁচ লাখ টন হবে।

বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক জানান, একটি একক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরের মাধ্যমে নতুন টার্মিনালটির সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা সম্ভব হবে। সরকার নতুন টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং টাস্কের জন্য একটি দক্ষ কোম্পানি মনোনীত করতে দরপত্র উন্মুক্ত করে দেবে।

সচিব জানান, ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠকে প্রথমে ১৩ হাজার ৬১০ দশমিক ৪৭ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে পরবর্তীতে একটি পৃথক কার্গো হাউজ স্থাপনসহ প্রকল্প কাজের কিছু অংশ বর্ধিত করায় মোট প্রকল্প ব্যয় বেড়ে ২১ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা হয়েছে। রফতানি ও আমদানি কার্গো হাউজ পৃথক করা এবং নতুন ভিআইপি টার্মিনাল করায় প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নতুন বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার ‘অচিন পাখি’ ও ‘সোনার তরী’র যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। বিমান দুটি ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডনের হিথ্রো ও ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরে চলাচল করবে।

বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে ম্যানচেস্টার রুটে বিমানের ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে। উড়োজাহাজ দুটি দিয়ে ম্যানচেস্টারের পাশাপাশি লন্ডনের হিথ্রো রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে ম্যানচেস্টার রুটের উদ্বোধনী ফ্লাইটের প্রায় সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। এছাড়া লন্ডনে আগে থেকেই আমাদের ফ্লাইট নিয়মিত যাওয়া-আসা করছে।’

ম্যানচেস্টার হলো ইংল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিম শহর। এখানে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস। তাদের বিশাল চাহিদার কথা মাথায় রেখে এই রুটে ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ২১ ডিসেম্বর ‘সোনার তরী’ এবং গত ২৪ ডিসেম্বর ‘অচিন পাখি’ অবতরণ করে। উড়োজাহাজ দুটিকে ওয়াটার স্যালুটের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হয়।

গত সেপ্টেম্বরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বোয়িং ৭৮৭-৮ সিরিজের চতুর্থ ড্রিমলাইনার ‘রাজহংস’ উদ্বোধনকালে অত্যাধুনিক দুটি আকাশযান কেনার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এগুলোর নাম রাখেন ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’। এ দুটি উড়োজাহাজ যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৮টি।

আরো সংবাদ