স্টাফ রিপোর্টার : লম্পট শিক্ষকের লালসার শিকার এক স্কুল ছাত্রী বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাড়িতে গত দু’দিন ধরে অবস্থান অনশন পালন করছেন। রবিবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী শিক্ষকের বাড়িতে ঢোকার পরপরই পরিবারের লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায়। এ সংবাদ জানাজানি হলে মেয়েটিকে এক নজর দেখার জন্য গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ ওই শিক্ষকের বাড়িতে ভীড় জমাতে থাকে। মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্কুল ছাত্রীর পিতা বাবু খান ও দ্বারিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা আকামত শেখ জানান, স্কুল ছাত্রী ( রিক্তা খাতুন (১৪) ) শিশুকাল থেকেই দ্বারিয়াপুর গ্রামে নানা বাড়িতে থেকে বড় হয়ে উঠেছে আর হাটদ্বারিয়াপুর সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়ন করছে। স্কুলের পাশাপাশি মেয়েটি একই গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আমজাদ হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার পুত্র প্রাইভেট শিক্ষক আরিফুল ইসলাম (২৮) এর নিকট প্রাইভেট পড়ত। এসময় শিক্ষক আরিফুলের কু-নজর পড়ে মেয়েটির উপর। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একপর্যায়ে ২৭ সেপ্টেম্বর উক্ত শিক্ষক তাকে নিয়ে গোপনে বের হয় এবং ফরিদপুর জেলার মধূখালী উপজেলার ডুমাউন গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে তার আত্বীয়দের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্ত্রী পরিচয়ে অবস্থান করে ও দৈহিক সম্পর্ক করে। এরপর মেয়েটি তাকে বারবার বিয়ের কথা বললে সে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে মেয়েটিকে ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে মধুখালী উপজেলার কামারখালী এলাকায় গড়াই সেতু টোল ঘরের পাশে দাড় করিয়ে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়।
এরপর দীর্ঘসময় দাড়িয়ে থেকে কোন উপায় না পেয়ে শেষ পর্যন্ত মেয়েটি ঐদিন সন্ধ্যায় উক্ত শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান অনশন পালন করতে থাকে।
মেয়েটির উপস্থিতি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে অন্যত্র পালিয়ে যায়। মেয়েটি দু’দিন ধরে না খেয়ে ওই বাড়িতে অবস্থান করার পর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ১ অক্টোবর বিকেলে মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান বিষয়টি জানার পর তিনি শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ দেন ।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহাবুবুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌছে ঘটনার সত্যতা পেয়ে সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবগত করেন। মাগুরার পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ান বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষকসহ তার পরিবারের সদস্য এবং মেয়েটিসহ তার পরিবারের অভিভাবকদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হাজির করতে নির্দেশ দেন।
পলাতক থাকায় অভিযুক্ত শিক্ষক বা তার পরিবারের সদস্যদের মন্তব্য জানা যায়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।