নেত্রকোণায় গলা কেটে এক শিশুর মাথা ছিন্ন করে নিয়ে যাওয়ার সময় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শিশুটি এবং তার খুনি দুই জনেরই পরিচয় জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে শহরের নিউটাউন এলাকার অনন্তপুকুর পাড়ে এই ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের তৈরি হয়েছে।
নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম শিশুটির পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। তার নাম সজীব। বয়স আট। সে নেত্রকোণারই সদর উপজেলার আমতলা গ্রামের রিকশা শ্রমিক রইছ উদ্দিনের ছেলে। রইছ উদ্দিন বর্তমানে শহরের কাটলি এলাকায় হিরণ মিয়ার বাসায় ভাড়াটে হিসেবে থাকছেন।
গণপিটুনিতে নিহত যুবকের নাম রবিন। ২২ বছর বয়সী এই যুবক নেত্রকোণা পৌর এলাকার কাটলী এলাকার বাসিন্দা। তিনিও পেশায় রিকশা চালান। কী উদ্দেশ্য শিশুটিকে খুন করেছেন, সেটিও তদন্তে বের হবে বলে বলছেন পুলিশ কর্মকর্তা তাজুল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বেলা একটার দিকে শহরের কাটলি এলাকা থেকে ওই যুবক শিশুর ছিন্ন মস্তক নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে পিছু ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে শহরের নিউটাউন এলাকার অনন্ত পুকুর পাড়ে ধরা পড়েন তিনি। সেখানেই চলে গণপিটুনি। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুর ছিন্ন মস্তক ও যুবকের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, ‘কেন এই হত্যাকাণ্ড তা বের করতে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। এখনও শিশুটির দেহ উদ্ধার করা যায়নি।
সম্প্রতি পদ্মাসেতু নির্মাণে এক লাখ মানুষের মাথা প্রয়োজন বলে ফেসবুক ও ইউটিউবে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এই গুজব সারাদেশেই ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সরকারকে রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করকে হয়। পাশাপাশি যারা গুজব ছড়িয়েছে তাদের বেশ কয়েকজনকে র্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছে। এদের মধ্যে অন্তত দুই জন জামায়াত নেতা-কর্মী হওয়ায় এর মধ্যে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার সন্দেহও তৈরি হয়েছে।
গুজবের কারণে একাধিক এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একজনকে পিটিয়ে হত্যাও করা হয়েছে।