আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৮:০৪

সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে: ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিনিধি:  জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেফতার করা অবাক কাণ্ড। এটার জন্য জবাবদিহি করতে হবে। খালেদা জিয়া ও বিনা কারণে আটক লোকজনকে কেন বন্দি করা হয়েছে সেটার জবাব অবশ্যই দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. কামাল।

তিনি বলেন, “পুরো দেশ জঙ্গল বানিয়েছে। জঙ্গিরাও এমনটা করে না। কেন এগুলো হচ্ছে, সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে! মাথা খারাপ হলে ডাক্তার দেখাতে হয়, তাদের ডাক্তার দেখাতে হবে।”

মইনুল হোসেন জেলে কেন জবাব চেয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, “আইনমন্ত্রী তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে। কেন বন্দি করছো, এটা জনগণকে জানাও। তোমার বাবার বন্ধু হিসেবে আমাকেও জানাও।”

তিনি আরো বলেন, “আইনমন্ত্রী তুমি যার চাকরি করছো, এখনও সময় আছে, তুমি তাকে বুঝাও। শপথ যেহেতু নিয়েছো, এটা তোমার দায়িত্ব। এই দেশ এখনো সভ্য, কিন্তু যারা দেশ শাসন করছে, তোমরা তাদের অসভ্য বানাচ্ছো। প্রশাসনে সভ্য লোকেরা আছে কিন্তু তোমরা তাদের খারাপ কাজে ব্যবহার করছো।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করে ড. কামাল হোসেন বলেন, “কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন না, ‘মামলা করো’। হচ্ছে টা কী এই দেশে? শেখ হাসিনা ২০০৬ সালে বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চান। ক্ষমতায় থাকলে একরকম, আর বিরোধী দলে থাকলে আরেকরকম।”

ড. কামাল হোসেন বলেন, বিনা কারণে ঘনঘন গ্রেফতার কেন? মইনুল হোসেন জামিন নিলো, তাকে আবার গ্রেফতার করা হলো। আইনমন্ত্রী তোমার কী হইছে, তুমি সব ভুলে গেছো নাকি? সংবিধান খুলে দেখো, দায়িত্ব কী? সন্ধ্যার পর কেন গ্রেফতার? ১০ বছর পরে হলেও তোমার বিচার হবে। আমাকে কী করবা? সর্বোচ্চ মেরে ফেলতে পারো, তাই তো? তোমার বিচার হবেই।”

তিনি বলেন, “গায়েবি মামলা, এটা কী? সিলেটে দেখলাম, কোন কারণ ছাড়াই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এটা বন্ধ করো। সাত দফা দাবি মানতেই হবে। এটা তো রাজার দেশ না, যে যা বলবা তাই হবে। আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ফ্যাসিবাদের পতন হবেই।”

আলোচনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বিচলিত হয়ে পড়েছে। এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে হঠাতে ঐক্যের প্রয়োজন। সেই ঐক্য ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। সরকার যতই গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করুক না কেন, মানুষ রাজপথে নামবেই। সংলাপের দাবি মানতে বাধ্য হবে।”

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “গণতন্ত্রের সাহসী সন্তান ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন। অবৈধ প্রধানমন্ত্রী মামলা করার উসকানি দেয়ার পরেই একটি মানহানি মামলায় গ্রেফতার করা হয়। এই মামলা জামিনযোগ্য হলেও তাকে জামিন না দিয়ে সাধারণ কয়েদির সাথে রাখা হয়েছে। এই সরকার একটি জলন্ত অগ্নিগিরির উপর বসে আছে। যেকোন সময় সরকারের পতন হবে।”

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা খান, সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জালাল হোসেন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট গরীবে নেওয়াজ, অ্যাডভোকেট এসএম কামাল হোসেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শফি উদ্দিন ভূইয়া, অ্যাডভোকেট কে এম জাবের, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসিন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম, অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, অ্যাডভোকেট গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী আলাল, অ্যাডভোকেট ড. মেহেদী, অ্যাডভোকেট শরীফ ইউ আহমেদ, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মতিলাল বেপারী প্রমুখ।

আরো সংবাদ