মোবাইলে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের বাথরুমের গোপন ভিডিও ধারণ করছিলেন তিনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক নারীর হাতে ধরা পড়লেন তিনি। নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের পিয়ন আবদুর রহিমকে (৩১) এ অপকর্মের কারণে শেষ পর্যন্ত পুলিশে দেয়া হয়।
চরজব্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ৯ এপ্রিল আন্তঃপ্রাথমিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার সময় উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আন্তঃপ্রাথমিক ক্রীড়ার উপজেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা বুধবার সকাল থেকে সুবর্ণচর শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়। এজন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে শিক্ষিকা, নারী অভিভাবক ও প্রতিযোগী ছাত্রীদের পোশাক পরিবর্তনসহ বাথরুম ব্যবহারের জন্য পার্শ্ববর্তী পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একটি কক্ষ ব্যবহার করা হয়।
ভুক্তভোগী একজন নারী জানান, সকাল থেকে ওই ব্যাংকের অফিস সহায়ক আবদুর রহিম নিজের মোবাইল দিয়ে বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে অভিভাবক, শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের গোপন ভিডিও ধারণ করছিলেন। দুপুর ১টার দিকে মুন্সিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক নারী অভিভাবক বিষয়টি বুঝতে পেরে ভিডিও রেকর্ডিং অবস্থায় মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেন। পরে শিক্ষকরা মোবাইলের মালিক অফিস সহায়ক আবদুর রহিমকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।
অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্ত আবদুর রহিম উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের মধ্য চরবাটা গ্রামের বাসিন্দা। তার বড় ভাই আবদুল আলিম পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের প্রধান শাখায় সিনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত। এ জন্য গুরুতর অপরাধ প্রমাণ থাকার পরও আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গড়িমসির করছে স্থানীয় একটি মহল।
রিয়াজ উদ্দিন নামে এক শিক্ষক বলেন, মোবাইলটি আমাদের হাতে আসার পর ছড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে শিক্ষকরা আপত্তিকর সব ভিডিও মুছে দেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ, ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে অভিযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক আলেয়া খাতুন বলেন, অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে অফিস সহায়ক আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
সুবনচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওসি শাহীন মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মোবাইলফোনটি জব্দ করে নিয়ে আসে। লিখিত অভিযোগ না থাকায় তাকে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।