সাবিনা ইয়াসমিন (৩০)। মধ্যবয়সী এই নারীর সঙ্গে প্রায় ৮ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল যশোরের অভয়নগরের বনগ্রামের শাহাজাহান সরদারের ছেলে নাজমুল হোসেনের (৩৫)। দাম্পত্য জীবনে সৌরভ হোসেন নামে তাদের এক ছেলেও রয়েছে। ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরি পাওয়া যায় জানিয়ে প্রায় তিন বছর আগে সাবিনাকে প্রতিবেশী দেশটিতে নিয়ে যান নাজমুল। এরপর কৌশলে তাকে সেখানকার পতিতালয়ে বিক্রি করে বাংলাদেশে চলে আসেন।
তবে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর কয়েকটি এনজিও’র সহায়তায় সাবিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে যশোরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সেই সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত নাজমুল হোসেনকে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করা হলে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন নাজমুল।
জানা যায়, প্রায় তিন বছর আগে নাজমুল সাবিনাকে জানায়, ভারতে গেলে তারা উচ্চ বেতনে চাকরি করতে পারবেন। তারপর থেকে নাজমুল প্রতিবেশী দেশটিতে যাওয়ার জন্য সাবিনাকে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। একপর্যায়ে স্বামীর কথায় বিশ্বাস করে ভারতে যেতে রাজি হয় সাবিনা। পরবর্তীতে নাজমুল ভারতের মুম্বাই শহরে নিয়ে সাবিনাকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়ে কৌশলে বাংলাদেশে চলে আসে।
এ ঘটনায় গত ১০ মার্চ মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন ২০১২ এর তিনটি ধারায় নাজমুলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে সাবিনার পরিবার। পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত যশোরের পিবিআই শাখাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেয়।
এরপর পিবিআই প্রধান মো. মোস্তফা কামাল ও অ্যাডিশনাল আইজিপির (চলতি দায়িত্বে) তত্ত্বাবধানে যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) হাবিবুর রহমান সাবিনাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। একপর্যায়ে পিবিআই যশোরের প্রচেষ্টায় মানবপাচার নিয়ে কাজ করা কয়েকটি এনজিও’র সহায়তায় সম্প্রতি সাবিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়।