স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে সরকার। বৃহস্পতিবারের মধ্যে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এছাড়া এ বছর কেন্দ্রীয়ভাবে পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় খুলে দেয়ার এই পরিকল্পনার প্রজ্ঞাপন শিগগিরই জারি করবে মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে তা নির্দেশনা আকারে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।
জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট পিইসি ও ইইসি পরীক্ষা বাতিলে সার সংক্ষেপ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সম্মতি দিয়ে আজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এ পরিকল্পনার খসড়ায় দেখা গেছে, বিদ্যালয় খোলার সরকারি নির্দেশনা দেবার পর নূন্যতম ১৫ দিন আগে শিক্ষক, কর্মচারী এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিদ্যালয়কে পরিচ্ছন্ন ও ক্লাস নেয়ার উপযোগী করে তুলতে হবে। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুলের গেটে বা প্রবেশের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা করতে হবে। থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে সবাইকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করানো হবে।
স্কুল রি-ওপেনিংয়ের পাঠ্যক্রম পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, করোনাকালীন সময়ের আগের মতো আর এক বেঞ্চে তিন বা চারজন শিক্ষার্থী বসতে পারবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক বেঞ্চে দু’জন শিক্ষার্থীকে বসাতে হবে। প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আগের মতো আর সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হবে না। একটি স্তরে সপ্তাহে দুই বা তিন দিন অথবা প্রতিদিন দুই-তিনটি ক্লাস নেয়া হবে। তবে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে চতুর্থ শ্রেণিকে বেশি গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পাঠের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নির্বাচন করে কোন দিন কোন বিষয়ের ক্লাস নেয়া হবে তা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক ও এসএমসির সদস্যদের নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে।
বিদ্যালয় চলাকালীন করণীয় হিসেবে এ পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, একসাথে শিক্ষার্থীরা ভিড় করে খেলাধুলা, আড্ডা-গল্প করতে পারবে না। সামাজিক দূরত্ব রেখে হাঁটা-চলা করতে হবে। নোটিশ বোর্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যোগাযোগ নম্বর লিখে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া স্কুলে থাকা শিক্ষার্থীর হঠাৎ করে করোনার উপসর্গ দেখা গেলে স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যবস্থা নেবে।