আজ - শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - সকাল ৭:৫৮

৩ মার্চ খুলনায় নেত্রী আসছেন! অতন্দ্র কামাল হোসেন- আগমনী বার্তা নিয়ে ছুঁটছেন দ্বারে দ্বারে।

নাঈম সাব্বির, (স্পেশাল করসপন্ডেন্ট পলিটিক্স ): মার্চ খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা এই লক্ষ্য নিয়েই কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ছুটে চলেছেন। সভা-সমাবেশ করছেন। নেয়া হচ্ছে নানা প্রস্তুতিমূলক কাজ। প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীও ব্যাপক তৎপর রয়েছে। জনসভা কে সামনে রেখে ব্যস্ততম সময় পার করছেন বাংলাদেশ আ’লীগের প্রভাবশালী সদস্য এসএম কামাল হোসেন। খুলনা জেলা , মহানগর সহ প্রতিটি সাংগাঠনিক থানায় সভা সমাবেশ করে চলছেন দিনরাত।গত ৪ সপ্তাহ ধরে নেতাকর্মীদের সাথে নেত্রীর আগমনী বার্তা নিয়ে ছুঁটছেন দ্বারে দ্বারে।৩ মার্চ খুলনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় দশ লাখেরও বেশী মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
ইতিমধ্যে খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে সর্বকালের মহাজনসমুদ্রে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ বলে খানজাহান আলী 24.com কে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেহেদী হাসান রাসেল। দক্ষিন বঙ্গে নেত্রী অনেক দিয়েছেন তাই বিশেষ কোন দাবি রাখবেননা তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ কে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করণ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ দ্রুত শুরু করা এবং কুয়েটের আইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি গুলি তারা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন এ ছাত্রনেতা।
অন্যদিকে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন,জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর নিকট খুলনা অঞ্চলে গ্যাস সংযোগ, খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা ক্যাডেট কলেজ, মেরিন একাডেমি, পূর্নাঙ্গ আইটি ভিলেজ, শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে রিসার্স সেন্টার, খুলনা জেনারেল হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণ, খুলনা প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু মিডিয়া হাউজসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হবে।এমপি মিজান আরও বলেন, এখনও খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়নি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহের জন্য দাবি জানাবো। প্রধানমন্ত্রী এই অঞ্চলের উন্নয়নে সবসময় আন্তরিক, এই অঞ্চলের মানুষও মনে করেন- শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের উন্নয়ন হয়। আমরা আশাকরি যে প্রকল্পগুলো এখনও বাস্তবায়িত হয়নি প্রধানমন্ত্রী এবার সেই প্রকল্পগুলোও বাস্তবায়নের ঘোষণা দেবেন।
এসএম কামাল হোসেন বলেন এমপি শেখ হেলাল সাহেবের নির্দশনা অনুযায়ী সব কাজ ইতোমধ্য সমাপ্ত প্রায়। জনসভায় নৌকার আদলে সুসজ্জিত মঞ্চ করা হবে। এই মহা জনসমুদ্রে নারীদের বিপুল সমাগম ঘটবে। খুলনা বিভাগসহ গোপালগঞ্জ থেকেও আসবেন সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীরা। সার্কিট হাউজ মাঠে প্রবেশে নারীদের জন্য চারটি গেট থাকবে। দুটি থাকবে পুরুষের জন্য। এ জনসভা থেকেই খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হতে পারে কীনা সে ব্যাপারে সম্ভাবনার কথা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।তিনি আরও বলেন, এক সময় খুলনা মহানগরী ছিল উন্নয়ন বঞ্চিত। আইনশৃঙ্খলা বলতে কিছুই ছিল না।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়েছে। ইতিমধ্যে খুলনায় দুটি কলেজ ও তিনটি স্কুল সরকারীকরণ করা হয়েছে। আরও দুটি নতুন সরকারি স্কুল স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে, খুলনা মহানগরীতে সুপেয় পানি সরবরাহ করার জন্য ওয়াসার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে, বিমানবন্দরের কাজ চলছে, অচল হয়ে যাওয়া মোংলা বন্দর সচল হয়েছে, লোকসানী প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। খানজাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু) হওয়ায় খুলনায় ব্যবসা বাণিজ্যে গতি ফিরে এসেছে। পদ্মা সেতু বাস্তবায়িত হয়ে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সার্বিক চিত্র পাল্টে যাবে।তিনি ধারাবাহিকভাবে সভা-সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। শুধু খুলনা মহানগরী নয়, জেলার পার্শ্ববর্তী বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ অন্যান্য জেলাতেও প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে জোর তৎপরতা চলছে। সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, সমুদ্রবন্দর মংলাসহ এ অঞ্চলের সর্বত্রই খুলনার এই জনসভাকে ঘিরে জনমনে ব্যাপক আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। জনসভাকে মহাজনসমুদ্রে পরিণত করার জন্য সর্বস্তরে পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতারা বর্তমান সরকারে উন্নয়ন কার্যক্রম ও সফলতার দিকগুলো তুলে ধরছেন। তিনি আরও বলেন বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর খুলনা অঞ্চলকে সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম, সাংবাদিক হুমায়ূন কবির বালু, মানিক সাহাসহ আরও কয়েক জনকে হত্যা করা হয়। মংলা বন্দরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের কাজসহ অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজ। মিল-কারখানাগুলোকে বন্ধ করে শিল্পাঞ্চল খালিশপুরকে মৃত পুরিতে পরিণত করা হয়।সম্পন্ন করে হাসপাতালটি চালু করা হয়েছে। দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ এখানে উন্নত সেবা পাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত সরকার বন্ধ করে দেয়া দৌলতপুর জুট মিল ও পিপলস জুট মিল ( বর্তমান খালিশপুর জুট মিল) চালু করা হয়েছে। অচল হয়ে পড়া অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো সচল করা হয়েছে। চ্যানেলের ড্রেজিংসহ নানা পদক্ষেপের কারণে মংলা বন্দর এখন গতিশীল হয়েছে, লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে খুলনার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে খুলনা আধুনিক রেল স্টেশন ও শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স নির্মাণ, দুইটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা, জেলা স্টেডিয়াম পুনর্নির্মাণসহ অনেক প্রকল্পের কাজ চলছে। নগরীতে সুপেয় পানি সরবরাহ করার জন্য ওয়াসার মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে, বিমান বন্দর, খুলনা-মংলা রেল লাইনের কাজও চলছে।
এছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে খুলনা বিভাগের জেলা ও উপজেলা কমিটি, পৌরসভা কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, দলীয় সংসদ সদস্যবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা পরিষদে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত চেয়ারম্যানবৃন্দ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদকদের অংশ গ্রহণে খুলনায় বিশেষ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো সংবাদ