আজ - রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি, (শীতকাল), সময় - বিকাল ৫:০৯

৭১-এ আমগো অবস্থান ছিল নিরপেক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে: শাইখুল হাদিস আজিজুল হক

বর্তমান উগ্রবাদী ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের পিতা প্রয়াত শাইখুল হাদীস নামে পরিচিত মাওলানা আজিজুল হক (তৎকালীন আমীর, খেলাফত মজলিস)। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার পর যিনি বলেছিলেন, ’ইসলাম নামের বৃক্ষটির গোড়ায় পানি নয়, রক্ত ঢালতে হবে’। তারপর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরুর উপক্রম হয়েছিল। ১৯৬৯ সালে মানুষের চাঁদে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘মানুষের পক্ষে চাঁদে যাওয়া বাস্তব নয়, তারা অন্য কোনো দেশ থেকে ঘুরে এসে দাবি করছে চাঁদে গিয়েছি’। ১৯৯৭ সালে মঙ্গল গ্রহ বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘মঙ্গল গ্রহে যাওয়া পিকনিকে যাওয়ার মতো ব্যাপার, চেষ্টা করলে আমরাও যাইতে পারি’। ৭১-এ তার অবস্থান যে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল সে কথাও আমৃত্যু অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করতেন। এবং ‘একাত্তরের ভূমিকার জন্য কোনো অনুশোচনা নেই’- একথাও বলতেন দাম্ভিকতার সঙ্গে। দুই বিয়ে করে ১৩ সন্তানের জনক আজিজুল হকের জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় উঠে আসে বহুবার।

১৯৯৭ সালের সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিচিত্রায় প্রকাশিত শাইখুল হাদিসের সাক্ষাৎকারটি মত ও পথের পাঠকদের জন্য তুলে  ধরা হলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা।

বিচিত্রা: আপনার নামের আগে এই শাইখুল হাদীস বিষয়টি কী?

শাইখুল হাদীস মাওলানা আজিজুল হক: হাদীস শাস্ত্রের বিশেষজ্ঞকে শাইখুল হাদীস বলা হয়।

বিচিত্রা: এই উপাধী কারা দেয়?

আ.হ: এইডা কেউ কাউরে দেয় না। হেঃ হেঃ। এইডা এমনে এমনেই হইয়া যায়। তার স্টাডি, সুখ্যাতি আল্লাহর রহমতে আলেম ওলামাদের দোয়ায় জনগণের মধ্যে ছড়াইয়া পড়ে।

বিচিত্রা: তারপর কি নিজে নিজেই নামের আগে শায়খুল হাদীস টাইটেল লাগিয়ে নেয়া যায়?

আ.হ: হ্যাঁ, লাগায়া নেয়া যায়। না… মানে… আলেম… উলামাদের দোয়ায় এইডা এমনে এমনেই হইয়া যায়।

বিচিত্রা: আপনার শায়খুল হাদীস কোন আলেম-উলামার দোয়ায় হয়েছে?

আ.হ: দেশের বিশিষ্ট-বিখ্যাত আলেমদের দোয়ায়।

বিচিত্রা: তাদের দু’ একজনের নাম বলবেন?

আ.হ: আছে অনেক, অনেক আছে, আমি তো হাদীস শাস্ত্রের উপর প্রচুর কাজ করেছি, অনুবাদ করেছি। এইভাবেই হইয়া গেছে।

বিচিত্রা: আপনারা ইসলামী ঐক্যজোট গঠন করেছেন। আসলে আপনাদের উদ্দেশ্য কী?

আ.হ: আমরা বর্তমান সরকারের ইসলাম বিরোধী কাজের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলব।

বিচিত্রা: মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘শিখা চিরন্তন’। আপনারা এর বিরোধিতা করছেন কেন?

আ.হ: এইগুলা ফালতু কথা। ঐহানে আগুন-পূজা করতাছে। এইডা মহাপাপ শিরিকি। ক্ষমার যোগ্য না।

বিচিত্রা: ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তো শিখা অনির্বাণ আছে। শিখা অনির্বাণ আর শিখা চিরন্তন তো একই জিনিস। এছাড়া শিখা অনির্বাণ জ্বলছে আরও অনেক আগে থেকে। এটার বিরুদ্ধে আপনারা কিছু বলছেন না কেন?

আ.হ: ক্যান্টনমেন্টে তো অস্ত্র নিয়া মিলিটারি পাহারা দেয়। ঐখানে যাইতে হইলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়া যাইতে অইব। আমরা সেই প্রস্তুতি নিতাছি। এছাড়া এমনি এমনি গেলে কিছু করা যাবে না। যেমন রেলগাড়ি দেইখ্যা সামনে লাফ দিয়া পড়লে থামব না। রেলগাড়ি থামাইতে হইলে সেইরকম একটা প্রস্তুতি নিয়া, দুচারটা হাতি নিয়া রেলের সামনে যাইতে হইবো। হাতির ওপর দিয়া তো আর গাড়ি যাইতে পারবো না। আমরা শক্তি সঞ্চয় করে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতাছি।

হিন্দুদের মূর্তিপূজা করা যা, আর শিখা চিরন্তনের সামনে গিয়া সম্মান করাও তাই। কারণ পূজা শব্দের অর্থই সম্মান প্রদর্শন। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরের শিখা অনির্বাণের কথা আমরা আগে জানতাম না। আর শিখা চিরন্তন তো সারাদেশ ঘুরাইছে। এইডাতো আরও খারাপ অইছে। সারাদেশের মাইনসের পাপ অইছে।

বিচিত্রা: যুদ্ধের প্রস্তুতিটা কী?

আ.হ: সরকার যদি এই আগুন-পূজা বন্ধ না করে তাহলে দেশে গৃহযুদ্ধ বাইধা যাইবো। তখন আর কিছু করার থাকবে না। আমরা সেই প্রস্তুতি নিতাছি।

বিচিত্রা: আপনারা কীভাবে ট্রেনিং নিচ্ছেন?

আ.হ: আমরা প্রস্তুতি নিতাছি।

বিচিত্রা: আগুন তো মানুষের খুবই প্রয়োজনীয় জিনিস। আপনার বাড়িতেও নিশ্চয় গ্যাসের চুলা জ্বলে…..

আ.হ: হ্যাঁ তা জ্বলে। তয় আগুনের সম্মান করন যাইব না। গ্যাসের আগুনের তো আমি সম্মান করি না।

বিচিত্রা: এবার আমরা একটু অন্য প্রসঙ্গে যাই। আপনি ৭১-এ কোথায় ছিলেন?

আ.হ: ৭১-এ তো ঢাকায় ছিলাম।

বিচিত্রা: তখন তো সারা দেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে। ঢাকায় আপনারা কী করতেন?

আ.হ: তেমন কিছুই করতাম না। নিরপেক্ষ ছিলাম।

বিচিত্রা: কিছুই করতেন না?

আ.হ: না। ৭১-এ আমগো অবস্থান ছিলো নিরপেক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে। আমরা কখনোই চাই নাই পাকিস্তান ভাইঙ্গা বাংলাদেশ স্বাধীন হোক।

বিচিত্রা: মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে থাকার জন্য অনুশোচনা হয় না?

আ.হ: না। আমরা তো ইসলামের পক্ষে ছিলাম। আমরা তখনো যা করেছি সেটাকেই ঠিক মনে করেছি। এখনো যা করছি এটাই ঠিক।

বিচিত্রা: রাজাকার, আলবদর, আলশামসের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলো না?

আ.হ: না, না এইগুলা জামাতিগো কাম।

বিচিত্রা: মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি ৭১-এ পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল…..

আ.হ: যাদের খুন করা হইছে, তারা খুব বড় মানুষ ছিলেন। ভালো মানুষ ছিলেন। এগুলো তো মারছে মুক্তিযোদ্ধারা। রাজাকাররা হয়তো কিছু মারছে। এইডা খুবই খারাপ কাম অইছে।

বিচিত্রা: মিটিং এ কী টাকা দিয়া লোক আনেন?

আ.হ: …..না…..তা ঠিক না। আমরা কী ক্ষমতায় আছি যে আমগো অত টাকা থাকব? সদস্যদের টাকায় পার্টি চলে।

বিচিত্রা: মানিক মিয়ার জনসভায় আপনারা বলেছেন ইসলামী ঐক্যজোট বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল। সরকার বাধা না দিলে এক কোটি লোক জড়ো হতে পারত। তাহলে আপনাদের পার্টির সদস্য সংখ্যা কত?

আ.হ: কমছে কম এক কোটি তো অইবই। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোক আনার জন্য অমরা টাকা দিছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ বাঁধা দিছে। ফলে টাকা নিয়াও তারা আসতে পারে নাই।

বিচিত্রা: এক কোটি সদস্য হলে, তাদের পরিবারের সদস্য নিয়ে আপনাদের ভোটারের সংখ্যা তো কমপক্ষে দু’ আড়াই কোটি হওয়ার কথা?

আ.হ: হ্যাঁ। তা তো হবেই। অবশ্য একটু কমও হতে পারে।

বিচিত্রা: তাহলে গত নির্বাচনে সিট মাত্র একটি পেলেন কেন? নিজেদের সদস্যরাও কী আপনাদের ভোট দেয় নি?

আ.হ: হেঃ হেঃ। বুঝেন না, নির্বাচনে সন্ত্রাস হয়। ডাকাতি হয়। আমাদের সদস্যদের দিয়া জোর কইরা  ওরা (আওয়ামী লীগ, বিএনপি) ভোট দেওয়াইয়া নেয়।

বিচিত্রা: বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন। আবার এখন বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। আসলে আন্দোলনটা কাদের বিরুদ্ধে?

আ.হ: যখন যে দল ক্ষতায় থাকে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করি। তাই আগে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। আর এখন বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতাছি। আমাদের আন্দোলনে বিএনপি সাপোর্ট করতাছে।

বিচিত্রা: নারী নেতৃত্ব বিষয়ে আপনাদের মতামত কী?

আ.হ: আমাদের ‘মসলা’ নারী নেতৃত্বের পুরোপুরি বিপক্ষে। রসুল (সঃ) বলেছেন, ‘যে দেশে নারী নেতৃত্ব থাকবে, সে দেশে উন্নতি হবে না। ঐ জাতি উন্নতি করতে পারবে না, তাদের কল্যাণ এবং মঙ্গল হবে না। যারা শাসন ক্ষমতা নারীর কাছে অর্পণ করবে।’ নারী নেতৃত্ব অবৈধ।

বিচিত্রা: বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছেন খালেদা জিয়া। তিনি একজন মহিলা। তাহলে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছেন কেন?

আ.হ: জি না। মানে বিএনপিরে সাথে নিয়া আন্দোলন করতাছি না তো। নারী নেতৃত্ব অবৈধ। বিএনপি আমাদের আন্দোলনে সাপোর্ট করতাছে।

বিচিত্রা: আপনি আগের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছি।

আ.হ: এরকম কিছু বলি নাই (হেঃ হেঃ হেঃ)। এমন নারী নেতৃত্ব থাকলে দেশের উন্নতি অইব না। দেশ দিন দিন রসাতলে যাইবো। তাড়াতাড়ি নারী নেতৃত্ব সরান।

বিচিত্রা: কবে নাগাদ ক্ষমতা যাবার আশা করছেন?

আ.হ: এইডা কি বলা যায় নাকি? আল্লাহ যহন চাইবো। আল্লাহ চাইলে যাইতে পারি তাড়াতাড়ি।

বিচিত্রা: তাহলে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাচ্ছেন?

আ.হ: এইডা কয়ন যাইত না, কয়ন যাইত না…

বিচিত্রা: ক্ষমতায় যেতে হলে তো আন্তর্জাতিক লবি শক্তিশালী হতে হয়। বাইরের কোনো দেশ আপনাদের পক্ষে আছে?

আ.হ: পাকিস্তান। আরব। আরবের মুসলিম দেশগুলো একটু দূরে। এইডা একটা অসুবিধা।

বিচিত্রা: আফগান তালেবানদের সঙ্গে তো আপনাদের যোগাযোগ রয়েছে?

আ.হ: আফগান তালেবানদের সাপোর্ট করি। তারা ইসলামের জন্য যুদ্ধ করছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি, তাদের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য। পাকিস্তান আফগানদের স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরাও তাদের সবরকম সাহায্য সহযোগিতা দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।

বিচিত্রা: শোনা যায়, তালেবানদের সাহায্যের জন্য বাংলাদেশ থেকে আপনারা কিছু যোদ্ধা পাঠিয়েছেন।

আ.হ: না। পাঠাই নাই। তালেবানরা এখনো এরকম কোনো সাহায্য চায় নাই। চাইলে তো দুই একজন না, লাখ লাখ যোদ্ধা পাঠামু। যেমন বসনিয়ার মুসলমানরা যখন সাহায্য চাইছিলো তখন আমরা একলাখ মুজাহিদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম। পরে আর দরকার হয় নাই দেইখা পাঠাই নাই।

বিচিত্রা: আপনাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে কোথায়?

আ.হ: আছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

বিচিত্রা: কাশ্মিরে তো আপনাদের কিছু মুজাহিদ পাঠিয়েছেন?

আ.হ: কাশ্মিরে অনেক বাংলাদেশি মুজাহিদ আছে। আমরা পাঠাই নাই।

বিচিত্রা: ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যেও বিরোধ। জামাতের সঙ্গে আপনাদের এতো বিরোধ কেন?

আ.হ: না, বিরোধ আর কই। তয় জামাতীরা দাঁড়ি রাখে ছোট ছোট(হেঃ হেঃ হেঃ)। নিয়ম অইল বড় দাঁড়ি রাখতে অইব (এই সময তিনি নিজের দাঁড়ি ধরে দেখান, কত বড় দাঁড়ি রাখা উচিত)। তাছাড়া জামাতিরা একটু উগ্র। শুনছি ওরা নাকি মানুষের রগ কাইটা দেয়। তাগো রক্ত গরম। এইগুলা ইসলাম সাপোর্ট করে না।

বিচিত্রা: তাবলীগ জামাতীদের সঙ্গেও তো আপনাদের বিরোধ আছে?

আ.হ: তাবলীগ জামাতিরা অইল এক্কেবারে নির্জীব। রক্ত ঠাণ্ডা। ইসলাম রক্ষার জন্য কিছু করে না। তাই আমরা পছন্দ করি না।

বিচিত্রা: আপনারা মানিক মিয়ার জনসভায় বলেছেন, ১৪ মাসে সরকার দেশের অর্ধেক ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। কীভাবে বিক্রি করলো- একটু বুঝিয়ে বলবেন?

আ.হ: বুঝেন না, লোক দেখানো পানিচুক্তি করছে। হেঃ হেঃ হেঃ। ভারতরে ট্রানজিট দিতে চায়। বিদ্যুৎ আমদানি করতে চায়। সরকার খালি ভারত ভারত করে। একটু দূরে হইলেও পাকিস্তান থেকেও তো বিদ্যুৎ আনা যায়।

বিচিত্রা: পাকিস্তান একটু বেশি দূরে হয়ে যায় না?

আ.হ: দূরে… হ্যাঁ তা একটু বেশি হয়। চেষ্টা করলে আনুন যায়।

বিচিত্রা: ইসলাম বিরোধীদের তালিকা তৈরি করে কী করবেন?

আ.হ: রসুল (সাঃ)- এর বদনাম করছে আলী আজগর। এই রকম আরো যারা আছে ইসলাম বিরোধী, যেমন কবীর চৌধুরী, শামসুর রাহমান, শাহরিয়ার কবির এই গুলার বিচার কইরা শাস্তি দিতে হইবো।

বিচিত্রা: কী শাস্তি দেবেন?

আ.হ: বিচারে যে শাস্তি হয়। দেশের মানুষ বিচার করব।

বিচিত্রা: ড. আলী আজগর তো বলেছেন, তিনি রসুল (সাঃ) কে অপমান করে কোনো কথা বলেন নি?

আ.হ: সে এখন কইলেই তো আর হইলো না। সে কইছে। আমগো লোকজন শুনছে। এইডার কোনো মাপ নাই। তারে শাস্তি পাইতে অইব।

মহামান্য রাষ্ট্রপতির মঞ্চে জুতা নিক্ষেপ করার অভিযোগ আছে আপনাদের দলের বিরুদ্ধে?

আ.হ: সেদিন রাষ্ট্রপতিরে মঞ্চে বসাইয়া রাইখা সচিব আগে বক্তৃতা করতে উঠছে। শেখ মুজিব জাতির পিতা…..এইগুলান কওয়া শুরু করছে। রাষ্ট্রপতিরে আগে বক্তৃতা দিতে না দেয়ায় এবং এইগুলান কওয়ায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে মঞ্চে জুতা মারছে। আর অহন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ষড়যন্ত্র করতাছে খতিবের বিরুদ্ধে। ‍

বিচিত্রা: নিয়ম অনুযায়ী তো সচিবেরই আগে বক্তৃতা দেয়ার কথা…

আ.হ: না, না। আগে রাষ্ট্রপতি বক্তৃতা দিব। তারপর অন্যরা।

বিচিত্রা: আপনি একবার বলেছিলেন, মানুষের চাঁদে যাওয়ার কথা মিথ্যা। অন্য কোনো দেশ থেকে ঘুরে এসে বলছে, চাঁদে গিছিলাম। মানুষ যে চাঁদে গেছে এটা কি আপনার এখনো বিশ্বাস হয় না?

আ.হ: হ্যাঁ, চাঁদে মনে হয় যাওয়া যায়।

বিচিত্রা: এখন তো মানুষ মঙ্গল গ্রহেও যাওয়ার চিন্তা করছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

আ.হ: আরে চাঁদে যাওয়া, মঙ্গল গ্রহে যাওয়া এইগুলা বড় কোনো কাম হইলো নাকি? এইডা তো একটা পিকনিক, হেঃহেঃ। আপনারা যেমন দল বাইন্ধা পিকনিকে যান, এইডাও ঐরকমই। তাছাড়া ঐখানে গিয়া অইবই বা কী? শুধু শুধু টাকা-পয়সা নষ্ট করা। মঙ্গল গ্রহে, চাঁদে যে কেউই যাইতে পারে। ইচ্ছা করলে আমরাও যাইতে পারি। এইডা কোনো ব্যাপার না।

বিচিত্রা: পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে আপনার মতামত কী?

আ.হ: ইসলামে পরিবার পরিকল্পনা এক্কেবারে হারাম। নাজায়েজ। আমরা পরিবার পরিকল্পনার পুরোপুরি বিপক্ষে। এর জন্য এত টাকা খরচ করে প্রচারের কোনো দরকার নাই। এবং এই নাফরমানি প্রচারণা বন্ধ করতে অইব।

বিচিত্রা: অপরিকল্পিতভাবে জনসংখ্যা বেড়ে গেলে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে না?

আ.হ: না। লোকসংখ্যা বাড়লে খাদ্য সংকট দেখা দিবে না। আহার আল্লায়ই যোগাইব। আল্লাহর দয়ায় আগের চেয়ে এখন খাদ্য উৎপাদন বাড়ছে। যত বেশি পোলাপান হোক না কেন এইডা খারাপ না। জন্মনিয়ন্ত্রণ মহাপাপ।

বিচিত্রা: বাংলাদেশ তো নেপালকে ট্রানজিট দিলো। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?

আ.হ: নেপালকে ট্রানজিট পাকিস্তান আমলেই দেয়ার কথা ছিলো। পাকিস্তানই দিতে চাইছিলো। তাই এইডাতে কোনো সমস্যা নাই। এখানে ভারতের কোনো মাতুব্বরি ছিল না। কিন্তু ভারত এখন এইখানেও মাতুব্বরি করতাছে। তাই আমরা এইডারও বিরুদ্ধে। ভারতের মাতুব্বরি ছাড়া ভুটান, শ্রীলঙ্কা এইগুলারেও ট্রানজিট দেয়া যায়।

বিচিত্রা: শুধু ভারত ছাড়া…

আ.হ: অন্য দেশগুলোরে দিলে আমগো সার্বভৌমত্ব নষ্ট অইব না। কিন্তু ভারতরে দিলে সার্বভৌমত্ব থাকব না। ভারত আমগো বুকের ওপর দিয়া আসা যাওয়া করব। এইডা আমরা মেনে নিতে পারি না।

বিচিত্রা: দেশে শিক্ষা পদ্ধতি কী হওয়া উচিত?

আ.হ: এই সরকার কুদরত-এ খুদার শিক্ষা পদ্ধতি চালু করতে চায়। এইডা চালু অইলে দেশে ধর্ম থাকবে না। তাই আমরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতাছি!

দেশের ৯৫% মুয়াজ্জিন ঠিকমত আযান দিতে পারে না। ইমামরা নামাজ পড়াইতে পারে না। তাই ব্যাপক হারে ধর্ম শিক্ষার প্রসার ঘটাইতে অইব। সাধারণ শিক্ষা বাতিল কইরা ধর্ম শিক্ষা চালু করতে অইব। আলেম উলামার সংখ্যা বাড়াতে হবে।

আরো সংবাদ