ফরিদপুরের সেই দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেলের নেশা ছিল জমি দখল। যে জমিই পছন্দ হতো, নামমাত্র দামে তাঁরা নিয়ে নিতেন। জমির মালিক বিক্রি করতে না চাইলে ভয় দেখিয়ে দখল করে নেওয়া হতো। এ কাজে তাঁদের যেমন সন্ত্রাসী বাহিনী ছিল, তেমনি পুলিশ বাহিনীকেও কাজে লাগাতেন। প্রয়োজনে জমির মালিককে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করাতেন। এভাবে সাত বছরে তাঁরা ২ হাজার ৪৫০ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। ঢাকায় মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় গ্রেপ্তারের পর সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন দুই ভাই।
মানি লন্ডারিং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস বলেন, বরকত ও রুবেল জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাঁদের হাতে টাকা এলেই জমি কিনে রাখতেন। সেই জমি বিভিন্ন ব্যাংকে বন্ধক দিয়ে ঋণ নিতেন। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির টাকা এভাবে বৈধ করার চেষ্টা করতেন।
সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, দুই ভাইয়ের নামে যে প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমি কেনা হয়েছে, তার বেশির ভাগই ফরিদপুর শহর ও আশপাশের। শুধু জমি নয়, তাঁদের নামে পাওয়া গেছে ৪৯টি ব্যাংক হিসাবের তথ্য। এসব হিসাবে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। তবে এসব হিসাবে বড় অঙ্কের কোনো অর্থ গচ্ছিত পায়নি সিআইডি। জমানো টাকা সম্ভবত আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
মানি লন্ডারিং মামলায় বরকত-রুবেল ছাড়া আরও জবানবন্দি দিয়েছেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার ওরফে লেবী, জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহমুদ ওরফে শামীম। সবার জবানবন্দিতে উঠে এসেছে এত কম সময়ে কীভাবে তাঁরা বিপুল সম্পদের মালিক হলেন তার বিবরণ। সে বিবরণ যেকোনো গল্পকে হার মানাবে।