রাজনীতির সংবাদ :: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি। দলীয় প্রধানকে ছাড়াই প্রথম কোনো নির্বাচনে অংশ নিল বিএনপি। এই নির্বাচনে ভয়াবহ ভোট ডাকাতির অভিযোগ ছিল বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। কিন্তু নতুন নির্বাচন দাবিতে কার্যত কোনো আন্দোলন কর্মসূচি দিতে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি জোট। এ নিয়ে কেন্দ্র ও তৃণমূলে ক্ষোভের অন্ত নেই।
শুধু তাই নয়, গত ১০ বছরে বিএনপি জোট চোখে পড়ার মতো সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। সবশেষ দুই-তিন বছরে বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতেও ব্যর্থ হয়েছে। এসব নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডসহ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা প্রশ্নবানে জর্জরিত হচ্ছে।
দুদিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তো স্পষ্টই বলেছেন– এ মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা না গেলে তার জীবনশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসকদের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেছেন– বেশ কিছু জটিল রোগে খালেদা জিয়া ভুগছেন। তার হাত-পা বাঁকা হয়ে গেছে, সোজা করতে পারছেন না। দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে বিএনপির শীর্ষ নেত্রী।
এমতাবস্থায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামা ছাড়া পথ দেখছেন না বিএনপি নেতারা। তৃণমূল থেকেও আন্দোলনের চাপ রয়েছে কেন্দ্রে। এমতাবস্থায় আন্দোলনের ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করার কথা ভাবছে বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এই তথ্য জানা গেছে।
দলীয় সূত্র জানায়, দলের করণীয় নিয়ে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে হাইকমান্ড যোগাযোগ করলে তারা দুটি প্রস্তাব দেন।
০১। খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে কেন্দ্রীয় নেতাসহ জেলা নেতাদের একযোগে কারাবরণ।
০২। এক দফা আন্দোলন, যা সফল করতে একযোগে সারা দেশের নেতাকর্মীরা রাজপথে নামবেন। এ দুই প্রস্তাব নিয়ে নীতিনির্ধারকরা গত বুধ ও বৃহস্পতিবার গুলশান কার্যালয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। সেখানে তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এক দফা আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন হাইকমান্ড। আন্দোলন সফল করতে মধ্যম সারির কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্বও দেয়া হয়েছে। তারা সারা দেশের জেলা, মহানগরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। আর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সরাসরি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশনা দিচ্ছেন।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, ১২ ডিসেম্বর চেয়ারপারসনের জামিনের রায়ের শুনানির পর আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। খালেদা জিয়ার জামিনের রায় নেতিবাচক হলে সরকার পতনে এক দফায় যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে হাইকমান্ডের।
যেমনটি বলেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তার ভাষায়, আমরা যদি দেখি বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার জামিন হয়নি, তা হলে এ দেশে এক দফার আন্দোলন হবে। তা হবে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলন। তবে এ নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।