মুনতাসির মামুন।। আগামীকাল ভোর ছয়টা থেকে যশোর জেলা অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউনে যাচ্ছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকবে।
কিছু সময় আগে বিকেল চারটায় যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এর কিছু সময় পর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই সংক্রান্ত বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
আজ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টার থেকে সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা পরীক্ষার যে ফল সরবরাহ করা হয়, তাতে যশোরের ১৪ ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করা হয়। এখন পর্যন্ত এই জেলায় শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩০।
অবনতিশীল পরিস্থিতিতে জেলা ‘করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটি’র সভা আজ সকাল সাড়ে দশটায় যশোর সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন, করোনা সংক্রান্ত সেনা তৎপরতায় যশোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লে. কর্নেল নিয়ামুল, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দীলিপকুমার রায়সহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা।
সভা সূত্র জানায়, সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তারা করোনা আক্রান্ত বলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় সম্ভাব্য করণীয় হিসেবে জেলাকে লকডাউন ঘোষণার পক্ষে মতামত দেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিকেলে যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক বলেন, লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে; যা আগামীকাল সোমবার ভোর ছয়টা থেকে কার্যকর হবে। লকডাউনের আওতায় থাকবে গোটা যশোর জেলা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অথচ কোনোভাবেই মানুষকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যাচ্ছে না। সেই কারণে আরো কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে জেলা লকডাউন করা হচ্ছে।
এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক জানান, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত লকডাউন বলবৎ থাকবে। জরুরি সেবা যেমন অ্যাম্বুলেন্স, হাসপাতাল, ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্যের দোকান, কৃষি সংক্রান্ত বিষয়াদি যেমন সার, বীজ, কীটনাশকের দোকান, ফুয়েল স্টেশন প্রভৃতি লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
এর আগে যশোরের চৌগাছা শহরকে প্রথম লকডাউন করা হয়। পরে গোটা উপজেলাকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়।
আজকের সভায় জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়।