আজ - মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি, (হেমন্তকাল), সময় - রাত ২:০৪

৯০ লাখ টাকার সড়ক খালের পেটে  ধসে ৯ মাসেই শেষ!

৯ মাস আগের কথা। বগুড়ার ধুনট উপজেলার সোনামুয়া হাট থেকে হাসাপোটল গ্রাম পর্যন্ত পাকা সড়কটি নির্মিত হয়েছিল।

প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় সড়কটি। এরইমধ্যে  সড়কের কান্তনগর গ্রামের ভেতর অন্তত ৫০ মিটার অংশ ভেঙে খালের ভেতর পড়েছে। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটেছে। এদিকে সড়ক নির্মাণের ৯ মাসেই তা ভেঙে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সড়কটি পাকা করার কাজ শেষ করা হয়েছে। এক হাজার ৭৭০ মিটার দীর্ঘ সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পেয়ে মেসার্স শুকরা কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কটি নির্মাণ করে। এতে এই এলাকাণ গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

সরেজমিন দেখা গেছে, নবনির্মিত পাকা সড়কের পাশ দিয়ে চলে গেছে কান্তনগর খাল। সড়কটি পাকা করার কাজের সময় ভাঙনরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। খালের পাশে সুরক্ষা বাঁধ (গাইডওয়াল) ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় সড়কটি টিকসই হয়নি। এবারের অতি বর্ষণে এই সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও আবার পাকা সড়কের কিছু অংশ ধসে খালের পেটে চলে গেছে। এই সড়কের পাশে কয়েক দিন ধরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

এ অবস্থায় সাত দিন ধরে অবিরাম বর্ষণে কান্তনগর গ্রামে সাইফুল ইসলামের বাড়ির সামনে সড়কের অন্তত ৫০ মিটার ভেঙে খালের ভেতর চলে গেছে। ফলে ভাঙন স্থানে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। ওই সড়ক দিয়ে বর্তমানে যান চলাচল করতে পারছে না। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের কিছু মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। এর পরও ওই সড়কের আরো প্রায় ১৫০ মিটার অংশ খালের পেটে ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, এই সড়কপথে অন্তত ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এলাকাটি কৃষিতে সমৃদ্ধ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে গ্রামগুলো থেকে কৃষিপণ্য কিনে নিয়ে যান। সড়কটি ভেঙে গিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা সড়কটি ব্যবহার করতে পারছেন না। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। তাই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা দরকার।

সড়কটির নির্মাণ কাজ দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন এলজিইডির ধুনট উপজেলা সার্ভেয়ার সুলভ কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, সড়কটি নির্মাণ কাজে কোনো প্রকার ত্রুটি ছিল না। স্থানীয়রা সড়কের পাশে খাল থেকে বালু উত্তোলনের ফলে সড়কটি টিকসই হয়নি। অতি বর্ষণের কারণে খালে ধসে পড়েছে সড়কের কিছু অংশ। তবে সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত স্থানটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ধুনট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, খালের পেটে সড়ক ধসে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এই সড়ক পথে স্থানীয় লোকজনের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। তাই এলজিইডির প্রকৌশলীকে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা বয়েছে।

আরো সংবাদ