অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে কক্সবাজারের টেকনাফ থানা থেকে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে। গতকাল দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার কামাল হোসেন। তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে তাকে নিয়ে আসা হয়। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম কারাগারে পৌঁছেন। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় আগামী সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
এর আগে গত ২৩শে আগস্ট টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা নম্বর ১১।
এরমধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ওসি প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ এনেছে।
আরো ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়েছে চুমকির বিরুদ্ধে। প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন বলেও দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং এজাহারে বলা হয়েছে। দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় ২৭শে আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে প্রদীপ কুমার দাশকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জমা দেয়া হয়। আদালত ১৪ই সেপ্টেম্বর আদেশের শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেন। আর ঘটনাস্থল বিবেচনায় চট্টগ্রামের সেই আদালতে ওসি প্রদীপকে হাজির করার কথা রয়েছে। প্রসঙ্গত, প্রদীপ কুমার দাশ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর সারোয়াতলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র লাল দাশের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা আর সি চার্চ রোডে তাদের নিজস্ব একটি আবাসিক ভবন আছে। সেই ভবনে তার স্ত্রী চুমকি সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন। কিন্তু দুদকের মামলা দায়েরের পর চুমকি আত্মগোপনে চলে যান।
এর আগে গত ৩১শে জুলাই দিবাগত রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ থানার শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় প্রদীপ কুমার দাশসহ ১০ পুলিশ সদস্য কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন। ওই মামলার তদন্ত করছে র্যাব।